সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(সিএএ) ও এনআরসির প্রতিবাদে উত্তাল দেশ। মোদী সরকার বিরোধী আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে অশান্তি। এরই মধ্যে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ঝাড়খণ্ডের গদি হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। পরিস্থিতি সামলাতে গত কয়েকদিন ধরেই সিএএ-এনআরসি নিয়ে নরম মনোভাব নিতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনা এখনও হয়নি সরকারের অন্দরে, এই বিবৃতি দিয়েও যেমন আগুন নেভানোর মরিয়া প্রয়াস করেছেন মোদী। তেমনি শাহ-ও নিজের এতদিনের আগ্রাসী মনোভাব থেকে সরে এসে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কথাই ঠিক। কোনও আলোচনাই হয়নি। তবে ড্যামেজ কন্ট্রোলে শুধু এই বিবৃতি যথেষ্ট নয় বুঝে দেশবাসীকে উন্নয়নের বার্তা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় মমতার ছায়াই দেখছে গোটা দেশ।
প্রসঙ্গত, গতকাল অটলবিহারী বাজপেয়ির জন্মদিবস পালনকে উপলক্ষ্য করে কখনও দিল্লী কখনও লখনউতে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন মোদী। যার মধ্যে অন্যতম অটল জল যোজনা নামক এক প্রকল্প। যাকে মমতার ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের অনুকরণই বলছে রাজনৈতিক মহল। দিল্লীর বিজ্ঞান ভবনে অটল জল যোজনার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী ৫ বছর ধরে সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে জলের সঙ্কট মেটাতে। দেশের ৭৮ টি জেলায় সাড়ে ৮ হাজারের বেশি গ্রামের ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রকল্প কাজ করবে। এই নতুন প্রকল্প অনুযায়ী প্রত্যেক গ্রামকে একটি করে ওয়াটার ফান্ড করতে বলা হবে। পঞ্চায়েতকে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠাতে হবে ওয়াটার বাজেট।
শুধু তাই নয়। কৃষকদের জলের ভয়াবহ সঙ্কটের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যতটা সম্ভব এমন বিকল্প চাষের কথা ভাবুন, যেখানে জলের প্রয়োজন সবথেকে কম হয়। বিশেষ করে আখচাষে প্রভূত পরিমাণ জলের প্রয়োজন। এই চাষে উদ্যোগী হওয়ার আগে গ্রামগুলিকে জল সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামের প্রত্যেক মানুষকেই বর্ষার জল ধরে রেখে সংরক্ষণ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর ঠিক এই আহ্বানই মোদীর বহু আগে করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ফলে মোদীর এই নয়া প্রকল্প যে মমতার ‘জল ধরো, জল ভরো’ কর্মসূচীরই সমতুল্য, তা বলাই বাহুল্য।