২০২০ সালেই পেশাদার টেনিসকে বিদায় জানাতে চলেছেন লিয়েন্ডার পেজ। কলকাতার ছেলে বুধবার এক টুইটার বিবৃতিতে জানিয়ে দিলেন, তাঁর আগামী বছরের পরিকল্পনা।
বড়দিনের আমেজে যখন মেতে সারা দেশ, তখন লিয়েন্ডারে লিখেছেন, ‘’২০২০ সালে আমি কিছু নির্বাচিত টেনিস টুর্নামেন্ট খেলব। সারা বিশ্বের নানা কোণে আমার অনেক ভক্ত ছড়িয়ে আছে, তাদের সঙ্গে আগামী বছরটা সেলিব্রেট করতে চাই। ওরাই আমাকে বরাবর অনুপ্রেরণা দিয়েছে, আমি হয়ে ওঠার জন্য। ওদের আন্তরিক ধন্যবাদ।’’
৪৬ বছর বয়সি ভারতীয় টেনিস তারকার ট্রফি ক্যাবিনেট উপচে পড়া সাফল্যে ঠাসা। যার মধ্যে ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ডাবলস খেতাবের পাশাপাশি রয়েছে ডেভিস কাপে সর্বাধিক ৪৪টি ডাবলস ম্যাচ জেতার বিশ্বরেকর্ডও। তবে সম্প্রতি তাঁর ফর্ম ভাল যাচ্ছিল না। কয়েক দিন আগেই বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ১০০ জনের বাইরে চলে যান। গত ১৯ বছরে যা দেখা যায়নি।
লিয়েন্ডারের লক্ষ্য প্রথম টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে টানা আটটি অলিম্পিক্সে খেলা। প্রায় তিন দশকের খেলোয়াড় জীবনে টোকিয়োই তাঁর বিদায়ী অলিম্পিক্স হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে, যদি তিনি যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। এই মঞ্চেই তিনি ভারতের একমাত্র টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৯৬ সালে আটলান্টায় সিঙ্গলসে পদক জিতেছিলেন।
টেনিস সার্কিটে লিয়েন্ডার বরাবরই অত্যন্ত আবেগপ্রবণ প্লেয়ার। দেশের হয়ে খেলা হোক আর নিজের পার্টনারকে নিয়ে গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টে নামা, আবেগকেই বরাবর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রাক্তন হকি তারকা ভেস পেজের ছেলে। সেই তিনিই টুইটারে আবেগ ভরা আবেদন জানিয়ে লিখেছেন, ‘’২০২০ সালটা আমার কাছে আবেগপ্রবণ হতে চলেছে। আর একবার, শেষ বারের জন্য ভক্তরা আমার পাশে থাকুক, আমার জন্য চিৎকার করুক”।
এক সময়ের সতীর্থ মহেশ ভূপতির সঙ্গেও নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে টেনিস বিশ্ব শাসন করেছেন লিয়েন্ডার। এই সময়ে ‘লি-হেশ’ জুটি তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পাশাপাশি বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে উঠে এসেছিল এক নম্বরে। ভারতীয় টেনিসের ইতিহাসে যা প্রথম। শুধু তাই নয়, ডাবলসে টানা ২৪টি ম্যাচ জেতার রেকর্ডও গড়েছিলেন তাঁরা। ভারতীয় টেনিসের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা তাঁর বাবা-মা ভেস এবং জেনিফারকেও ধন্যবাদ দেন। যাঁরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ‘‘বাবা-মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যাদের থেকে খেলোয়াড় হওয়ার জিন পেয়েছি, যে পরিবেশ তাঁরা তৈরি করে দিয়েছেন এবং নিঃশর্ত ভাবে ভালবেসেছেন, তার জন্য। তোমাদের সমর্থন এবং বিশ্বাস না থাকলে এই জায়গায় উঠে আসতে পারতাম না,’’ লিখেছেন লিয়েন্ডার। পাশাপাশি তিনি তাঁর দুই দিদি ও মেয়ে আইয়ানাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন আর সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘২০২০ আবেগঘন একটা বছর হতে চলেছে। সকলের সঙ্গে কোর্টে দেখা করার ইচ্ছে রইল। আপনাদের কাছে সিংহহৃদয় হয়ে উঠতে পেরে গর্বিত”।