চাহিদা কমার জেরে দেশের অর্থনীতি ঝিমিয়ে বহু দিন। একের পর এক পরিসংখ্যান আর রেটিং সংস্থা ক্রমাগত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যাচ্ছে কমে যাওয়া তো অনেক দূরের কথা, দিনকে দিন যেন আরও জাঁকিয়ে বসছে অর্থনীতির ‘অসুখ’। এই পরিস্থিতিতে ঘাড়ে বিপুল দেনা তো ছিলই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম ফি বাবদ কেন্দ্রের ঘরে লক্ষাধিক টাকা জমার দায়ও চেপেছে টেলিকম সংস্থাগুলির ওপরে।
শুক্রবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট বৈঠকে তাই ফের আর্থিক সুরাহার জন্য দরবার করেছে টেলিকম শিল্পের সংগঠন সিওএআই। সংস্থাগুলির বিপুল আর্থিক দায়ের হিসাব দিয়ে আর্জি জানিয়েছে লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম ব্যবহারের চার্জ (এসইউসি) কমানোর।
সম্প্রতি আর্থিক সঙ্কট নিয়ে সরব হয়েছে টেলিকম শিল্পের একাংশ। রিলায়্যান্স জিয়ো বাজারে পা রাখার পর থেকে শুরু হওয়া তীব্র মাসুল যুদ্ধের জেরে আয়ে যে টান পড়েছে, তা-ও স্বীকার করেছে ভোডাফোন-আইডিয়া ও এয়ারটেলের মতো সংস্থা। এই অবস্থায় ভোডাফোন আইডিয়ার চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলম বিড়লা সম্প্রতি জানান, কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য না পেলে ঝাঁপ বন্ধ করতে হবে সংস্থার।
অর্থমন্ত্রী-বণিকসভার বৈঠকে এয়ারটেল চেয়ারম্যান সুনীল মিত্তলও মাসুল বৃদ্ধির দাবি তোলেন। আর বৈঠকের পরে সিওএআইয়ের ডিজি রাজন ম্যাথুজ বলেন, ‘লাইসেন্স ফি ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার আর্জি জানিয়েছি। স্পেকট্রাম ব্যবহারের চার্জ ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে করতে বলেছি ১ শতাংশ।’
জিএসটিতে আগে মেটানো করের টাকা হিসেবে প্রাপ্য ৩৬,০০০ কোটি টাকা মেটাতেও কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছে টেলি শিল্পের প্রতিনিধিরা। ম্যাথুজের অভিযোগ, লাইসেন্স ফি ও এসইউসি পরিষেবা নয়। তবু পরিষেবা গণ্য করায় ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়। উল্লেখ্য, সংস্থাগুলির কাছে লাইসেন্স ফি বাবদ কেন্দ্রের পাওনা ৯২,৬৪২ কোটি টাকা। স্পেকট্রাম ব্যবহারের চার্জ বাবদ বকেয়া ২৪,৭২৯ কোটি।