এনআরসি ও সিএএ নিয়ে এইমুহূর্তে বিক্ষোভে উত্তাল দেশ। বাংলা, দিল্লী, উত্তরপ্রদেশ সমস্ত জায়গায় একের পর এক বিক্ষোভের চিত্র সামনে এসেছে। আর তার মধ্যেই অমিত শাহের এনআরসি সংক্রান্ত একটি বহু বিতর্কিত মন্তব্য আচমকা টুইটার হ্যান্ডল থেকে মুছে ফেলল বিজেপি। কেন এই টুইট সরিয়ে নেওয়া হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও এর কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
অমিত শাহের সেই টুইটটি মাস আটেক আগের। লোকসভা নির্বাচনের প্রচার অভিযান তখন তুঙ্গে। বিজেপির টুইটার হ্যান্ডলে সেইসময় অমিত শাহের একটি মন্তব্য ফলাও করে পোস্ট করা হয়। ‘আমরা সারা দেশে এনআরসি রূপায়ণ করবই। হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখ ছাড়া প্রত্যেক অনুপ্রবেশকারীকে আমরা তাড়াব’- অমিতের এই উক্তির পাশে #নমোফরনিউইন্ডিয়া লিখে অনলাইন প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি।
সম্প্রতি বিজেপির টুইটার হ্যান্ডল থেকে অমিতের ওই টুইটটি উধাও হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি চোখে পড়তেই নতুন করে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠছে, লাগাতার বিক্ষোভের জেরে বেকায়দায় পড়েই কি টুইট মুছে দিল বিজেপি?
তবে এখন টুইট মুছে দিয়ে কোনও লাভ নেই বলে ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের প্রধান জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘বিজেপির আইটি সেল টুইট মুছে দিতেই পারে। কিন্তু সংসদে দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সব রাজ্যে এনআরসি হবেই। তা মুছতে পারবে না ওরা।’
একটি অংশের দাবি, যে ভোটব্যাঙ্ককে টার্গেট করে এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে এগোচ্ছে মোদী সরকার, অমিতের ওই টুইটে সেই হিন্দুদের তাড়াব না বলে আস্বস্ত করা হলেও, ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসাবেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। দেরিতে হলেও বিষয়টি নজরে পড়েছে গেরুয়া শিবিরের। তাতেই টনক নড়েছে। তাই চুপিসারে ওই টুইটটি মুছে দেওয়া হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনেই এনআরসি নিয়ে সংসদে মুখ খুলেছিলেন অমিত শাহ। সেখানে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনও সংশয় রাখবেন না, গোটা দেশেই এনআরসি হবে।’ তাঁর ওই মন্তব্যের রেশ ধরে সেই সময় বিজেপি সাংসদেরাও দেশব্যাপী এনআরসি তৈরির দাবিতে সরব হন। কিন্তু তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার সাফাইও দিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারকে। ড্যামেজ কন্ট্রোল দিতে এ দিন সংবাদপত্রে দেওয়া বিজ্ঞাপনে কেন্দ্র জানায়, দেশ জুড়ে কোনও এনআরসি ঘোষণা হয়নি।