মাস দেড়েক আগেই মুমূর্ষু দুই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল ও এমটিএনএলের সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। আর তারপরেই ওই দুই সংস্থার যে সমস্ত কর্মীর বয়স ৫০ বছর বা তার বেশি, তাঁরা স্বেচ্ছাবসরের জন্য ৩ ডিসেম্বর অবধি আবেদন করতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে অর্ধেকের বেশি কর্মী স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে আবেদন করায় আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম অবস্থা বিএসএনএলের। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার সামিল বিদেশি ভেন্ডরদের ৩০০০ কোটি টাকার বেশি বকেয়া মেটানোর দাবি।
নোকিয়া, জেডটিই ও ইউটিস্টারকম-এর মতো যে সমস্ত বিদেশি সংস্থা বিএসএনএলকে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে তারা হুমকি দিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তাদের বকেয়া না পেলে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটির ভারত জোড়া নেটওয়ার্কে সহায়তা তারা বন্ধ করে দেবে। চলতি মাসে বিএসএনএলকে আলাদা আলাদা চিঠি দিয়ে এই সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ২০১৮-র নভেম্বরের পর থেকে তারা কোনও পেমেন্ট পায়নি। ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত বকেয়া পেলে তবেই তারা বিএসএনএলকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও ভবিষ্যৎ পরিকাঠামো দেবে। ফলে, মোবাইল পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় বিএসএনএলের প্রায় ১২ কোটি মোবাইল গ্রাহক।
বিএসএনএল চেয়ারম্যান প্রবীণ কুমার পুরওয়ার বলেন, ‘একাধিক ভেন্ডরের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে এবং তাদের সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে। তারা ডিসেম্বর মাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।’ যদিও গোটা পরিস্থিতি নিয়ে অখুশি ভেন্ডররা। যেমন গত ১৬ ডিসেম্বর বিএসএনএলকে লেখা এক চিঠিতে নোকিয়া বলেছে, ‘গত ১৩ মাস আমরা কোনও পেমেন্ট পাইনি। বিএসএনএলের কাছে সুদ সহ আমাদের বকেয়া পাওনা প্রায় ১,২৭২ কোটি টাকা।’
নোকিয়ার এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘গত প্রায় ১৪ মাস ধরে পাওনা অর্থ পেতে নিয়মিত তদ্বির করে যাওয়ার পর এটা অত্যন্ত হতাশজনক। বিশেষ করে কেন্দ্র বিএসএনএলের জন্য পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ ঘোষণা করার পরও আমরা কত দিনের মধ্যে আমাদের পাওনা অর্থ পাব, সে বিষয়ে কিছু জানি না।’ আর এক ভেন্ডর চিনা সংস্থা জেডটিই এক চিঠিতে বিএসএনএলকে জানিয়েছে, গত বছর নভেম্বরের পর থেকে তারা কোনও পেমেন্ট না পাওয়ায় বিএসএনএলকে সহায়তা করা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিএসএনএলের কাছ থেকে জেডটিই-র পাওনা ১,৩০০ কোটি টাকার বেশি।