মরণ-বাঁচন ম্যাচে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি ভারত। প্রথম ম্যাচ জিতে একদিনের সিরিজে ক্যারিবিয়ানরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে। তাই কায়রন পোলার্ডদের পাল্লা কিছুটা হলেও ভারী। কারণ, এই ম্যাচ জিতলেই তারা সিরিজ পকেটে পুরে ফেলবে। তাই সিরিজ বাঁচানোর লড়াইটা অনেক কঠিন কোহলি বাহিনীর সামনে। রকম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেও দুই শিবিরেই ভেসে উঠছে আইপিএল এবং আইপিএল নিলামের ছায়া। যে নিলাম কলকাতায় হতে চলেছে ম্যাচের পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার।
হোপদের থামানোর জন্য তৈরি হচ্ছেন দীপক চাহার। তাঁর তূণে দুটো নতুন অস্ত্র যোগ করেছেন এই পেসার। যে কারণে এখন সাদা বলের ক্রিকেটে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন সিএসকে-র এই পেসার। চাহার বলেছেন, ‘‘আমার হাতে একটা ভাল স্লোয়ার বাউন্সার আছে। তা ছাড়া আমি ইয়র্কারটা নিখুঁত করার জন্য খাটছি। এখন আমি বিশ্বাস করি, আমাকে দুটো ছয় মারলেও আমি একটা ইয়র্কার ঠিক করে দেব।’’ আইপিএলে চেন্নাইয়ের মাঠে বল করে করে যে তিনি সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্য তৈরি হতে পেরেছেন, তা জানিয়েছেন চাহার। এই পেসার আরও বলছেন, ‘‘আগের ম্যাচে আমরা, বোলাররা কিছু ভুল করেছিলাম। আশা করছি, কাল আর সেই ভুলগুলো করব না।’’
আজ ভারতীয় দলে খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রোহিত শর্মার সঙ্গে লোকেশ রাহুলই ওপেন করতে পারেন। তিনে বিরাট কোহলি। কিন্তু সমস্যা হল, গত ম্যাচে তিন তারকাই বড় রান করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। আশা করাই যেতে পারে, ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে রোহিত-কোহলিরা আরও দায়িত্বশীল ব্যাটিং উপহার দেবেন। চিপকে প্রথম ম্যাচে চাপের মুখে সাহসী ব্যাটিং করেছিলেন শ্রেয়স আয়ার ও ঋষভ পন্থ। যা তাঁদের আত্মবিশ্বাসে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে। টপ অর্ডার কোনও কারণে ব্যর্থ হলে, তাঁরা যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে পারবেন, তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন শ্রেয়স-ঋষভ জুটি। তবে সেট হওয়ার পরেও তাঁদের উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই রোগটা যত দ্রুত তাঁরা শুধরে নিতে পারবেন, তাতে দল ও তাঁদের মঙ্গল। কেদার যাদবকে অলরাউন্ডার হিসাবে ব্যবহার করছেন কোহলি। কিন্তু গত ম্যাচে কেদার কিন্তু আশাপ্রদ পারফরম্যান্স মেলে ধরতে পারেননি। একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে। তাই জাড্ডুকে বসিয়ে স্ট্রাইকিং স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালকে খেলানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপের পর ফের একসঙ্গে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কুল-চা জুটিকে। দুই স্পেশালিস্ট পেসার হিসাবে মহম্মদ সামির সঙ্গে দীপক চাহারের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। তৃতীয় পেসারের কাজটি করবেন শিবম দুবে।
টি-২০ সিরিজে হারের ধাক্কা সামলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুর্দান্ত কামব্যাক করেছে। প্রথম একদিনের ম্যাচে শিমরন হেটমায়ার, শাই হোপ, নিকোলাস পুরানরা পরিণতবোধের পরিচয় দিয়েছেন। ২৮৮ রানের টার্গেট তাড়া করে ম্যাচ জিততে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। এই মাঠে শাই হোপ গত বছর দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন। তাই ভারতীয় বোলাররা যদি দ্রুত ভুল শুধরে নিতে না পারেন, তাহলে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন বফলে যাবে কোহলি ব্রিগেডের। নতুন বলে মহম্মদ সামি ও দীপক চাহারকে উইকেট তুলতে হবে। না হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আটকানো কঠিন। ইনিংসের মাঝপথে কুলদীপ যাদব গত ম্যাচে উল্টো দিক থেকে সেভাবে সাপোর্ট পাননি। যুজবেন্দ্র চাহাল খেললে সেই সমস্যা অনেকটাই দূর হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হয়তো সুনীল আম্বরিসকে বসিয়ে খেলাতে পারে এভিন লুইসকে। রোস্টন চেজ, কিয়েরন পোলার্ড ও জ্যাসন হোল্ডারের মতো অলরাউন্ডার ক্যারিবিয়ান ব্রিগেডের বড় ভরসা। গত ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে রোহিত, রাহুলদের সতর্ক হয়ে খেলা উচিত কটরেল, জোসেফদের।