বিরোধীদের হাজারো বিরোধিতা সত্ত্বেও গত সপ্তাহেই সংসদের দুই কক্ষে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব) পাশ করিয়ে নেয় মোদী সরকার। আর বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর, তা এখন আইন। কিন্তু এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এখন গোটা দেশেই জ্বলছে প্রতিবাদের আগুন। যদিও, বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা বোঝানোর চেষ্টা করছেন, শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতেই এই আইন এনেছে সরকার।
তবে গেরুয়া শিবির যাই বলুক না কেন, নাগরিকত্ব আইনে এমনি এমনিই যে অভিবাসীরা নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন, তা কিন্তু নয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র থেকে সোমবার জানানো হয়, নাগরিকত্বের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এবং নথিভুক্তির জন্য পূরণ করতে হবে সমস্ত শর্ত। নাগরিকত্বের বিধিগুলি শিগগিরই প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে উৎপীড়িত হয়ে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাঁদের আর এখন থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হবে না। স্পষ্টতই, মুসলিমদের জন্য তেমন সুযোগ রাখা হয়নি। এই ধর্মভিত্তিক বন্দোবস্ত নিয়ে চলছে বিতর্ক, ছড়িয়েছে তীব্র অসন্তোষ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রের বক্তব্য, যাঁরা এদেশের নাগরিক, তাঁদের ক্ষেত্রে তো এই আইন প্রযোজ্য নয়। তাঁদের চিন্তারও কিছু নেই। কিন্তু নাগরিকত্বের প্রমাণের বিষয়টি নিয়ে যথেষ্টই উদ্বেগ রয়েছে। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নাগরিকপঞ্জী অর্থাৎ এনআরসি–র বিষয়টি। উদ্বেগ এই প্রমাণ পেশের দায় নিয়ে। তাছাড়া, নাগরিকত্বের নতুন আইন অনুযায়ী যাঁদের আবেদন করতে হবে, তাঁদের মনেও রয়েছে প্রশ্ন, ঠিক কী কী শর্ত পূরণ করতে হবে, কী ধরনের কাগজপত্র পেশ করতে হবে। এছাড়া অনলাইন আবেদন নিয়ে সাধারণ মানুষের অস্বাচ্ছন্দ্য তো আছেই।