ক্যাব ঘিরে প্রতিবাদ এখনও অব্যাহত বাংলায়। গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিনেও রেল অবরোধ করা হয়, অবরুদ্ধ থাকে জাতীয় সড়কও। গতকাল কার্যত বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ চলে জেলায় জেলায়, যা এখনও চলছে। অশান্তি কমলেও কাটেনি আতঙ্ক।
গতকাল বীরভূম জেলার দুবরাজপুরের সাত কেন্দুলি মোড়ে জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সাঁইথিয়ার মহিষডহরি হল্ট স্টেশনে বিক্ষোভকারীরা ট্রেন অবরোধ করে। ট্রেনের সামনে লাইনে খড় দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় হাওড়া-সিউড়ি ইন্টারসিটি আটকে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর অবরোধ ওঠে। রবিবার লোহাপুর স্টেশনে ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনার পর স্টেশনে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। এদিন মুরারইয়ের চাতড়া স্টেশনে অবরোধ করা হয়। কিন্তু, প্রচুর র্যাফ ও আরপিএফ থাকায় কেউ বিশৃঙ্খলা পাকানোর সাহস পায়নি।
গত দু’দিন ধরে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি ছিল অগ্নিগর্ভ। রবিবার বিকেল থেকে পুলিস ও প্রশাসন কড়া হাতে হিংসা দমনে নামে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। তাই সোমবার জেলার পরিস্থিতি সেই তুলনায় অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে এদিন রঘুনাথগঞ্জের ওমরপুরে হাজার হাজার মানুষ জাতীয় সড়কে নেমে বিক্ষোভ দেখায়। এলাকায় ছিল বনধের চেহারা। দোকানপাট বন্ধ, রাস্তায় প্রচুর পুলিস। প্রতিবাদীরা বিক্ষোভ দেখালেও হিংসার রাস্তায় যায়নি।
সোমবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে হিংসার কোনও ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক ছিল পুরোমাত্রায়। ফলে গত তিনদিন ধরে অশান্তির খবরে থাকা জেলাগুলিতে লোকজন রাস্তাঘাটে কম নেমেছিল। হাওড়া জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। তার উপর আজ, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই জেলায় ইন্টারনেট বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে এদিন বাঁকুড়ায় অশান্তি ছড়ায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠি চালানোর পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসও ছুঁড়তে হয়।
পাশাপাশি মালদহের সামসিতে প্রতিবাদীরা স্টেশনের দিকে এগতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। লাঠিচার্জ করেও সামাল দিতে না পেরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। তাতে কয়েকজন জখম হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে রবিবার মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলায় ব্যাপক হিংসার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৬০ জনকে এবং বীরভূমে ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় জেলায় বিক্ষোভের জন্য মোট ৩৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।