নাম বদলের রাজনীতি থেকে যেন আর সরে আসতে পারছেন না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। একের পর এক অনেকগুলি স্টেশন থেকে শুরু করে শহরের নাম পরিবর্তন করেছেন তিনি। মাঝে আগ্রার নামও বদলে ‘অগ্রবান’ করতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন তিনি। যদিও সেটা পরে আর কার্যকর হয়নি। তবে এবার তিনি যেদিকে এগোচ্ছেন সেটা একদিকে যেমন বিপজ্জনক, তেমনই ভয়াবহ। কারণ, মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করা শুরু করলে কোথায় গিয়ে যে থামতে হয়, সেটাই হয়ত ভুলে গিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, এবার মেরঠ জেলার নাম বদলে ‘পণ্ডিত নাথুরাম গডসে নগর’ করার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। একই সঙ্গে গাজিয়াবাদ ও মুজফফরনগর জেলার নামও বদলের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ সরকারের রাজস্ব বোর্ড নাম বদলের প্রেক্ষিতে এই তিন জেলার জেলাশাসকদের মত অবিলম্বে জানতে চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছে।
সেই চিঠিতে বেশ কিছু জায়গার নাম পরিবর্তনের কথা সুপারিশ করা হয়েছে বলে খবর। যেমন হাপুরের নাম বদলে মহন্ত অভৈদ্যনাথ নগর, গাজিয়াবাদের নাম বদলে মহন্ত দিগ্বিজয় নগর করার প্রস্তাব রয়েছে। তবে হাপুরের জেলা শাসক যোগী আদিত্যনাথের গুরুর নামে এই জেলার বদল করতে নারাজ। তিনি এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে মুজফফরনগরের নাম বদল করে কী নাম রাখা হবে সেই নিয়ে কোনও প্রস্তাব আসেনি ওই চিঠিতে।
স্বাভাবিকভাবেই এই নাম বদলে সায় নেই কোনও জেলাশাসকেরই। কিন্তু রাজধানী লক্ষ্মৌ থেকে বারবার আসা যোগী সরকারের চিঠি তাঁদের চিন্তা বাড়িয়েছে। এই নিয়ে রীতিমতো নিজেদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক। তিনি জানাচ্ছেন, আমরা যদি ডেডলাইনের মধ্যে অনুমোদন না দেই তবে একে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবেও ধরা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী এর জবাবদিহি চাইবেন। যখন এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার হয় জেলা শাসকের দফতরে টিপ্পনি জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু সরকার ইতিহাস ঘেঁটে ও অন্যান্য মতামতের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেয়।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কার সুপারিশে এই নাম বদলের প্রস্তাব করেছেন তা এখনও জানা যায়নি। সূত্রের খবর, মেরঠের ‘অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা’ নামের এক সংগঠন গত ১৫ নভেম্বর যোগী আদিত্যনাথের কাছে এই আবদার করেছিল। তারপরই এই নাম বদলের জন্য উদ্যোগী হন যোগী আদিত্যনাথ। ফলে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ‘বিকাশ’-এর নামে যে নাম বদলের রাজনীতি চালু হয়েছিল, তাতে থামার কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না।