স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব) পেশ করার আগে থেকেই সরব হয়েছিল বিরোধীরা। তারপর তুমুল হই-হট্টগোল, ভোটাভুটি পেরিয়ে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ হয় ক্যাব। আর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর নাগরিকত্ব সংশোধনী এখন আইন। কিন্তু তাও হাল ছাড়েনি বিরোধী দলগুলি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পিনারাই বিজয়নের মতো অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যখন এই আইন কার্যকর করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছেন, রাজ্যে রাজ্যে তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধীরা, তখন তাদের সুরেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় পা মেলাতে শুরু করল বিজেপির জোট সঙ্গীরাও। যেমন, সংসদে ক্যাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল আসাম গণ পরিষদ(অগপ)। কিন্তু আসামে তার বিরুদ্ধে চলতে থাকা ব্যাপক আন্দোলনের জেরে এবার কার্যত দ্বিধাবিভক্ত দল।
কেন অগপ সংসদে বিল সমর্থন করেছিল, তা নিয়ে ক্ষোভ গোপন করেননি আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লকুমার মহন্ত। শুধু তাই নয়। রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শরিক হলেও সমর্থন তুলে এনডিএ ছাড়ার কথাও তাঁরা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন মহন্ত। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, লোকসভা ও রাজ্যসভায় বল পাসের সময় অগপ সেটিকে সমর্থন করেছিল। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। আমাদের বিলটিকে সমর্থন করা ঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত আসামের মানুষের কথা ভাবা। এই রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা উচিত হবে না। আমরা আসামে তা চালু করতে দেব না।
কিন্তু কেন্দ্র যদি জোট শরিকের কথা না শোনে? আইন যখন চালু হয়েছে, আসামেও তো তা কার্যকর করার কথা। যদি না ফের কোনও সংশোধনী এনে আসামকে কোনও ছাড় দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে কি অগপ জোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে? মহন্ত সাফ জানান, তাঁর দল জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া এবং সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। ফলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অগপ যে পুরো অবস্থান বদলে ফেলছে, মহন্তর বয়ানেই তা স্পষ্ট।