ক্যাবের বিরুদ্ধে উত্তাল গোটা বাংলা। তবু এই মুহূর্তে হিংসার পথে না-হাঁটাই উচিত বলে মনে করছেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জির প্রতিবাদে সরব বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করণীয়, রবিবার বিকেলে তা নিয়ে বৈঠক করেন ফুরফুরা শরিফ আহালে সুন্নাতুল জামাত, অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি অ্যাসোসিয়েশন, এবিএস এডুকেশন কাউন্সিল, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ, আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চ, নো এনআরসি মুভমেন্ট, গণসংস্কৃতি পরিষদ, আইসা-সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
এ দিনের বৈঠকে থাকা ‘নো এনআরসি মুভমেন্ট’-এর কর্মসমিতির সদস্য কমল সুর বলেন, ‘‘মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে যে-ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার দিকে কেন্দ্রীয় সরকার যদি ঠিকঠাক দৃষ্টি দেয়, তবে বিপরীতে যা ঘটছে, তা ঘটার কোনও কারণ নেই। আমার কাছে মনে হচ্ছে, রাজ্য সরকারও যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে না।’’ হিংসাত্মক আন্দোলন করে আদতে এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী আন্দোলনকে দুর্বলই করা হচ্ছে বলে মনে করেন বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি সামিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কখনওই হিংসা সমর্থন করি না।’’
আগামী বৃহস্পতিবার দুপুরে ধর্মতলায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েছে এনআরসি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চ। ওই দিন দেশের ১০০টি শহরে এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন ৬০টি সংগঠনের নেতা-সদস্যেরা। ফুরফুরা শরিফ আহালে সুন্নাতুল জামাতের সম্পাদক পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী, অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রুহুল আমিন, এবিএস এডুকেশন কাউন্সিলের সম্পাদক পীরজাদা নওসাদ সিদ্দিকীর তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে তার পক্ষে শান্ত থাকা খুবই মুশকিল। তবু এই মুহূর্তে হিংসার পথে না-যাওয়াই শ্রেয়। এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছাড়া পথ নেই। কারণ, হিংসার প্রতিটি ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলি তাদের পক্ষে ব্যবহার করবে। তাতে আন্দোলনের ক্ষতি ছাড়া লাভ নেই।
একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে ওই সব সংগঠনের নেতারা বলেছেন, ‘‘সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আমাদের দিক থেকে আবেদন, একই রকম যৌথ ভাবে লড়াইয়ে থাকুন। অকারণ হিংসার পথে পা বাড়াবেন না। প্ররোচনায় পা দেবেন না। ধৈর্য হারাবেন না। এই ভয়ানক ব্যাপারে বাংলার সমস্ত মানুষই বিপদের সামনে। এই লড়াইয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করুন। বাংলার মানুষ একযোগে এই বিপর্যয় রুখে দেবেন।’’ নওসাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘‘আমরা সব সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে।’’