মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই বলে থাকেন, ‘এগিয়ে বাংলা’। এ কথা মোটেও ভ্রান্ত নয়। কারণ বিগত ৮ বছরে মমতার নেতৃত্বে একদিকে কন্যাশ্রী, উৎকর্ষ বাংলার মতো প্রকল্পগুলি যেমন পেয়েছে আন্তর্জাতিক সাফল্য, তেমনি পঞ্চায়েত-গ্রামোন্নয়ন এবং রেশন ব্যবস্থাতেও সারা দেশের কাছে এ রাজ্য হয়ে উঠেছে রোল মডেল। কেন্দ্রীয় রিপোর্টে ১০০ দিনের কাজে পরপর তিনবার রাজ্যের মুকুটে উঠেছিল সেরার শিরোপা। এবার কুলপি ব্লকের বাবুরমহল গ্রাম পঞ্চায়েতকে ১০০ দিনের কাজে দেশের মধ্যে সেরা পঞ্চায়েতের শিরোপা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগাথনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির শুভেচ্ছা বার্তা হোয়ার্টসঅ্যাপে পাওয়ার পরই দেশের মধ্যে সেরা পঞ্চায়েতের পুরষ্কার পাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন কুলপি বিডিও সঞ্জীব সেন ও বাবুরমহল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুমিত্রা বৈদ্য।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের চতুর্দশ অর্থ কমিশনের জিপিডিপি ও ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে এমজি এনআরইজিএস প্রকল্পে দেশের সমস্ত পঞ্চায়েতের কাছে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষের সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য একটি পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছিল। সেখানে কুলপি ব্লকের বাবুরমহলে গ্রামপঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষের সামাজিক ও আর্থিক মানোন্নয়নের জন্য ১০০ দিনের কাজের ওপর একগুচ্ছ পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনায় পঞ্চায়েতের খালকাটা, পুকুরকাটা, নিকাশিনালা সংস্কার, বনসৃজন, গ্রামীণ রাস্তা তৈরি ও মেরামত–সহ উদ্যান পালনে মহিলাদের স্বনির্ভর করার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল। গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১৮৪টি পরিবারকে গড়ে ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হয়েছে। শ্রম দিবস সৃষ্ট হয়েছে ২১৮৪০০। যার মধ্যে ৪৬ শতাংশ কর্মী ছিলেন মহিলা। কুলপি ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ১০০ দিনের প্রকল্পে গড়ে ৯৯.৯ দিন কাজ দিতে পেরেছে।
সেই রিপোর্ট কয়েকমাস আগে জমা পড়ে কেন্দ্রের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে। সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কুলপি ব্লকের বাবুরমহল গ্রাম পঞ্চায়েতকে দেশের মধ্যে সেরা নির্বাচন করে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। দেশের ২৬২৬৩১টি পঞ্চায়েতকে হারিয়ে পয়েন্টের ভিত্তিতে সেরা হয় বাংলার এই পঞ্চায়েত। উল্লেখ্য, ৯টি গ্রামসভা নিয়ে এই পঞ্চায়েত। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজারের বেশি। ২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত পঞ্চায়েত বামেদের দখলে ছিল। পরে তৃণমূল পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে। ২০১৮ সালে সুমিত্রা বৈদ্য পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার পর থেকে পঞ্চায়েত এলাকায় মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কার্যকলাপ আগেই নজর কেড়েছে। সুমিত্রার কথায়, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের এই স্বীকৃতি এ রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েতের সাফল্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় পঞ্চায়েতের প্রত্যেক বাসিন্দার সহযোগিতায় এই সাফল্য মিলেছে।’