ডার্বির আগে এই ম্যাচটাই ছিল নিজেদের শেষবার পরখ করে নেওয়ার সুযোগ। আর এদিন পাশ মার্ক নিয়ে উতরে গেলেন ফ্রান গঞ্জালেস-হোসেবা বেইতিয়ারা। এদিন কল্যাণী স্টেডিয়ামে খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে মোহনবাগান। মাটিতে বল রেখে ছোট ছোট পাসে বিপক্ষের অর্ধে উঠছিলেন বাগান ফুটবলাররা। দু’প্রান্ত ধরে একের পর এক বল সাজিয়ে দিচ্ছিলেন গুরজিন্দর, জুলিয়ান কলিনাসরা। মাঝমাঠে দাপটে খেলছিলেন বেইতিয়া, ফ্রান গঞ্জালেজ, নওদোম্বা নওরেম। তার ফলে শুরুতেই গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল মোহনবাগান।
২৩ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে গুরজিন্দরকে ফাউল করেন গোকুলামের গোলকিপার উবেইদ। পেনাল্টি পায় বাগান। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী উবেইদকে ভুল দিকে ঝাঁপাতে বাধ্য করে ঠান্ডা মাথায় গোল করে বাগানকে এগিয়ে দেন ফ্রান গঞ্জালেজ। তারপরেও বাগানেরই প্রাধান্য ছিল খেলায়। সেভাবে বল পায়েই পাচ্ছিলেন না গোকুলামের হেনরি কিসেকা, মার্কোস জোসেফরা।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মোহনবাগান বক্সে ফাউল করা হয় গোকুলামের ফুটবলারকে। কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রেফারি। পেনাল্টির নির্দেশ দেন তিনি। আর সেই পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরাতে ভুল করেননি মার্কোস জোসেফ। বাগান গোলরক্ষক শঙ্কর রায়কে বাঁদিকে ফেলে ডানদিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন গোকুলামের প্রাণভোমরা। ১-১ ফলেই ড্রেসিং রুমে ফেরে দু’দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফের গোকুলাম ডিফেন্সকে ধাক্কা দেন সেই গঞ্জালেজ। ৪৮ মিনিটের মাথায় বেইতিয়ার কর্নার থেকে হেডে গোল করে বাগানকে ফের এগিয়ে দেন তিনি। তারপর আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলা চলতে থাকে। একদিকে গোল শোধ করার জন্য একের পর এক আক্রমণ গড়ছিল গোকুলাম। কিন্তু সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের জমাট ডিফেন্সে গোল আসেনি। বিশেষ করে জোসেফকে চুপ করিয়ে রেখেছিলেন গুরজিন্দর, মোরান্তেরা। গোলের নীচে তৎপর ছিলেন শঙ্কর। কিছু ভাল সেভ করতে হয় তাঁকে।
গোল খাওয়ার পরে অবশ্য বেশি আক্রমণে ওঠে গোকুলাম। কিন্তু গোলের মুখ খুলছিল না। অন্যদিকে রক্ষণ সামলে আক্রমণে উঠছিল মোহনবাগান। মাঝেমধ্যে মাঠের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল। বেশ কয়েকবার গোলের কাছে পৌঁছেও যায় জোসেফরা। কিন্তু গোল আসেনি। ৮৮ মিনিটের মাথায় হেনরি কিসেকার বিতর্কিত গোল বাতিল করেন রেফারি। পরের মিনিটেই মার্কোস জোসেফের জোরালো শট পোস্টে লেগে ফেরে। শেষ মুহূর্তে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক গুরজিন্দর কুমার। যার ফলে পরবর্তী ডার্বি ম্যাচে অধিনায়ককে পাবে না মোহনবাগান। শেষের দিকে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েও গোকুলাম কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে ২-১ গোলেই ম্যাচ জিতে নেয় কিবু ভিকুনার মোহনবাগান।