১০০ দিনের কাজের জন্য কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক প্রতিবার যে পুরস্কার দেয়, এবার তা পেতে চলেছে বাংলার দুই জেলা। দেশের মধ্যে প্রথম স্থান পেয়েছে বাঁকুড়া। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার। সেরা পারফরম্যান্সের পুরস্কার পাচ্ছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলপির বাবুরমহল গ্রাম পঞ্চায়েত।
শনিবার সকালে নিজের ফেসবুক পোস্টে এই খবর জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর টিমকে অভিনন্দন জানিয়ে মমতা বলেছেন, ‘এটা পুরোটাই টিমওয়ার্ক। রাজ্য, জেলা এবং পঞ্চায়েতের লাগাতার মনিটরিং-এর ফল এই পুরস্কার।’ তিনি ফেসবুক পোস্টে আরও জানান, বাংলাই দেশের মধ্যে ১০০ দিনের কাজে সেরা।
বাঁকুড়া এবং কোচবিহার দুটি জেলা পরিষদই তৃণমূলের দখলে। ২০১৩ সাল থেকেই জেলা পরিষদ পরিচালনা করছে তৃণমূল। গত দু’বছর পরপর ১০০ দিনের কাজের সেরা জেলার পুরস্কার পেয়েছিল বিকাশ রায়চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বীরভূম জেলা। এবার রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলা প্রথম সারিতে উঠে এল।
কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছিল গ্রাম-শহরে দারিদ্র কমার ক্ষেত্রে রেকর্ড করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বাংলা। গোটা দেশে যখন গড়ে দারিদ্রের হার বেড়ে গিয়েছে তখন বাংলার এই ছবিটা তাৎপর্যপূর্ণ বইকি। বিশেষ করে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে বাংলায় দারিদ্র কমার হার বেশি। হিসেবমতো ২০১১-১২ আর্থিক বছর থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত এই পাঁচ বছরে বাংলায় সার্বিক ভাবে দারিদ্রের হার কমে হয়েছে ১৩.৯৮ শতাংশ। বলাই বাহুল্য, ২০১১ সালে পরিবর্তনের পর থেকে বাংলায় শাসনক্ষমতার নেতৃত্বে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুতরাং এই কৃতিত্বও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারেরই।
যোজনা কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১-১২ আর্থিক বছরে বাংলায় ১৯.৯৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করতেন। গ্রামে দারিদ্রের হার ছিল ২২.৫২ শতাংশ। সংখ্যার বিচারে ১ কোটি ৪১ লক্ষ ১৪ হাজার মানুষ বসবাস করতেন দারিদ্রসীমার নীচে। শহরে তখন দারিদ্রের হার ছিল ১৪.৬৬ শতাংশ। শহরে ৪৩ লক্ষ ৮৩ হাজার মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে ছিলেন।
রাজ্যের এই দুটি জেলার পুরস্কার পাওয়া রাজনৈতিক ভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া ও কোচবিহারে জোর ধাক্কা খেয়েছিল শাসকদল। তারপর হারানো জনসমর্থন পুনরুদ্ধারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতিয়ার করেছিলেন পঞ্চায়েতের কাজকেই। জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করে জোর দিয়েছিলেন ১০০ দিনের কাজ-সহ একাধিক প্রকল্পের উপর। সেই দুটি জেলাই এবার পুরস্কার নেবে জাতীয় মঞ্চে।