আসামে এনআরসির জেরে এক ধাক্কায় ঘরছাড়া হয়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ। তারপর থেকেই বঙ্গ জুড়ে এনআরসি আতঙ্ক। আতঙ্কের জেরে আত্মহত্যা করেছেন বা মারা গেছেন এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়, এবার ফের ঘটল সেই এক ঘটনা। জমির কাগজ না থাকার আতঙ্কে জঙ্গীপুরে মারা গেলেন প্রৌঢ়।
মৃত ওই ব্যক্তির নাম কুদরত শেখ। জানা গেছে জমির কাগজপত্র না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেছিলেন তিনি। তারপরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গীপুর মহকুমা হাসপাতালে। গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের দাবি, জমির কাগজ না থাকার জন্যে আতঙ্কে ভুগছিলেন, তাই এমন আকস্মিক মৃত্যু।
মৃত ওই প্রৌড়ের বাড়িতে রয়েছেন কুদরতের স্ত্রী সুরতভান বিবি ও তার পাঁচ ছেলেমেয়ে। কুদরতই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। ভবিষ্যত ভেবে তাই রীতিমতো অস্থির তাঁরা। কুদরতের পড়শিরা জানান, পাড়ার অনেকেই আসন্ন দিনগুলির কথা ভেবে চিন্তিত। এই মৃত্যু তাই রীতিমতো নাড়া দিয়ে গেছে তাঁদের।
জানা গেছে, সাগরদিঘিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জন্সি বাসস্ট্যান্ডে চায়ের দোকান ছিল কুদরত শেখের। সম্প্রতি লোকসভা ও রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়া নিয়ে সমস্ত জায়গার মতো তাঁর চায়ের দোকানেও জোর চর্চা হতে শুরু হয়। কুদরতের বাড়ির লোকজন জানান, গত দুদিন ধরে চায়ের দোকান বন্ধ করে বাড়িতে পুরোন দলিলের খোঁজে- ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু দরকারি কাগজপত্র না পেয়ে বেজায় চিন্তায় পড়ে যান। বুধবার রাত থেকে বেজায় কান্নাকাটি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সকালে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তাঁর অবস্থা বেগতিক দেখে ওই ডাক্তার তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।