কাগজে-কলমে এখনও জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-র সহ সভাপতি তিনি। দলে তাঁর স্থান নীতীশ কুমারের পরেই। নীতীশ কুমার আবার এনডিএ শরিক। অথচ সেই ব্যক্তিই এবার নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে দেশের সমস্ত অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের এক হওয়ার ডাক দিলেন। তিনি প্রশান্ত কিশোর। যার রণনীতি ও কৌশলের জেরে মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন ২০১৪ সালে। যিনি তৃণমূলের বর্তমান পরামর্শদাতা, সেই প্রশান্ত কিশোর।
যখন থেকে লোকসভায় জেডিইউ এই বিলের সমর্থন করেছে, তখন থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে প্রশান্ত কিশোরের। পরপর টুইটে দলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এবার জাতীয় স্তরে সকল অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের এক হওয়ার ডাক দিলেন প্রশান্ত। শুক্রবার সকালে ফের একবার টুইটারে তিনি এই নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ কিছু কথা লেখেন। পিকে লিখেছেন, ‘সংসদে তো সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতে গেল। আদালতের বাইরে এবার ভারতের আত্মা বাঁচানোর দায়িত্ব রয়েছে ১৬ জন অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের। যারা নিজেদের রাজ্যে এই আইন লাগু করবেন।’ এর মাধ্যমে যে সকল অবিজেপি শাসিত মুখ্যমন্ত্রীদের প্রশান্ত কিশোর এক ছাদের তলায় নিয়ে আসতে চাইছেন স্পষ্ট।
ইতিমধ্যেই নিজেদের রাজ্যে এই আইন লাগু হতে দেবেন না বলে পষ্টাপষ্টি জানিয়েছেন তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাদের কথাও নিজের টুইটে উল্লেখ করেছেন প্রশান্ত। তিনি লিখেছেন, ‘তিন মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু ক্যাব এবং এনআরসির পক্ষে নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সময় এসে গেছে বাকিরাও যেন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেন।’
শুধু প্রশান্ত নয়, জেডিইউ-র সহ সভাপতি ছাড়াও আরেক নেতা পবন ভার্মাও এই আইনের বিরোধিতা করেছেন। লোকসভায় বিলটি উপস্থিত হওয়ার সময় থেকেই তারা অখুশি। যদিও তাদের অবস্থানকে ‘ব্যক্তিগত’ আখ্যা দিয়ে শোকজ করেছে জেডিইউ। এই অবস্থায় গতকালও ক্যাবের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন প্রশান্ত। তিনি লেখেন, ‘আমাদের বলা হচ্ছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নয়, ফিরিয়ে দেওয়ার বিল। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে, এনআরসির সঙ্গে মিলে ক্যাব সরকারের হাতে এমন একটা বিধ্বংসী অস্ত্র তুলে দেবে যার মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চালানো হবে।’ এই অবস্থায় জেডিইউর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতে এই দূরত্ব ঘুচবে কিনা তা অবশ্য সময়ই বলবে।