নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা ক্যাব নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা ৬ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মেরি কম। রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব বিলের ভোটাভুটিতে এই বিলের সমর্থনেই ভোট দেন অলিম্পিকের পদক জয়ী। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিনি যে এই বিলকে সমর্থন করেন না, সেটাও স্পষ্টভাবে জানালেন মেরি ।
রাজ্যসভার অধিবেশনের আগে এক সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলকে সাক্ষাতকার দেন মেরি কম। সেখানে যখন তাঁকে নিয়ে এই বিল নিয়ে প্রশ্ন করা হয় মেরি বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই বিল। সরকার বা কোনও মন্ত্রীর তরফে যখন বলা হয়েছে, তখন আমি সংসদেই থাকব। এটা আমার হাতেও নেই, আমার মতামত কেউ এখানে গ্রাহ্যও করবে না। সরকার এবং বাকি সকল পক্ষ যখন একে সমর্থন করছে, তখন আমিও সমর্থনই করব।’
যেহেতু তিনি এখনও রাজনীতির ময়দানে পা রাখেননি, তাই এই নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতেও রাজি নন মেরি কম। মেরির কথায়, ‘দেখুন আমি রাজনীতিবিদ নই। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছে। এরপর আমি যদি বলি বিল প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক, কেউ শুনবে না। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কখনই একে থামানো যাবে না। ফলে সিদ্ধান্ত যখন নেওয়াই হয়ে গিয়েছে, সেটাকে মেনেই নিতে হবে। যদি সত্যি জানতে চান আমি কী চান, বলব আমি শুধু চাই দেশের জন্য অলিম্পিকে সোনার পদক জিততে।’ হেসে বলে যান মেরি কম।
ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়াও মঙ্গলবার নাগরিকত্ব বিল নিয়ে নিজের তীব্র অসন্তোষের কথা জানিয়েছিলেন। কেননা উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্যকে এই আইনের বাইরে রাখা হলেও সিকিমকে এর মধ্যেই রাখা হয়েছে। তাই কেন্দ্রের ওপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ হামরো সিকিম পার্টির সভাপতি।
অন্যদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে রূপ পেতেই এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল ও ইউনিয়ন মুসলিম লীগ। তাদের দাবি, কেন্দ্রের এই আইন সংবিধানের সমানাধিকারের আইনকে ভঙ্গ করে। সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগির কথা কোথাও উল্লেখ করা করা নেই। তখন তা লঙ্ঘন করেই মুসলিম বাদে সকল সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা নতুন আইনে ঘোষণা করেছে সরকার। এর মাধ্যমে পাকিস্তান, আফগানিস্থান ও বাংলাদেশের অমুসলিম নাগরিক, যারা ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত হয়েছেন এবং ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন তাদের নিঃশর্তে নাগরিকত্ব দেবে ভারত সরকার।
এই আইনের প্রতিবাদে ক্ষোভে রীতিমতো আগুন জ্বলছে উত্তর-পূর্বে। আসাম, ত্রিপুরা-সহ মেঘালয়ে কার্ফু লাগু করেছে সরকার। নেমেছে সেনা। বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যাচ্ছে। তবে কেন্দ্র নিজের জায়গায় অনড়।