উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে হবে৷ তা না হলে উন্নাওয়ের নির্যাতিতার দেহ দাহ করা হবে না৷ দাবি এমন থাকলেও শেষমেষ আসেননি যোগী। বরং ‘তাঁর হয়ে’ এসেছিলেন পুলিশ সুপার-সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা। নির্যাতিতার পরিবারকে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর উন্নাও নির্যাতিতার শেষকৃত্যে সায় দেয় পরিবার। তবে নিজেদের মূল দাবি থেকে পিছু হটেনি তারা। সবচেয়ে কম সময়ে অপরাধীদের কড়া শাস্তির দাবিতে তারা অনড়। এই বলে শেষকৃত্য জড়ো হওয়ার পরেও নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারকে শুনতে হল কটাক্ষ, তাও পুলিশের মুখ দিয়ে! সেই নিয়ে এবার বিতর্কে পুলিশ সুপার বিক্রান্তবীর সিং।
উন্নাওয়ের ২৩ বছরের নির্যাতিতার শেষকৃত্যে বহু মানুষের সমাগম হয়েছিল। প্রত্যেকেই রাগে-ক্ষোভে ফুঁসছেন এবং দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করছেন। এই এত জনসমাগম দেখে প্রচণ্ড রুষ্ঠ হয়েছেন পুলিশ সুপার বিক্রান্তবীর সিং! ক্ষোভ চাপতে না পেরে তিনি বলে বসেন, ‘এখানে কি শ্যুটিং চলছে নাকি?’ এইরকম একটা সংবেদনশীল ঘটনার প্রেক্ষিতে এই ধরনের মন্তব্যে চরম অপমানিত বোধ করেছেন নির্যাতিতার পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। পুলিশ সুপারের এই মন্তব্যের তাঁরা তীব্র নিন্দা করেন। একদিকে ধর্ষণকারীদের এনকাউন্টার করা তেলেঙ্গানা পুলিশকে নিয়ে ধন্য ধন্য করছে দেশ, অন্যদিকে যোগী রাজ্যের পুলিশ এই ধরনের অসংবেদনশীল মন্তব্যে ছিছিক্কার পড়েছে সর্বত্র।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষণ মামলার শুনানির জন্য আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা ওই তরুণী। পথে তাঁকে ধাওয়া করে ৫ দুষ্কৃতী। সেই দলে ছিল ধর্ষণে অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদী এবং শুভম ত্রিবেদী। প্রথমে লাঠি দিয়ে নির্যাতিতার পায়ে সজোরে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। এরপর ছুরি চালানো হয় গলায়। সবশেষে গায়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় নির্যাতিতাকে। ওই অবস্থাতেই প্রায় ১ কিলোমিটার দৌড়ে এক ব্যক্তির কাছে ফোন চেয়ে পুলিশকে ফোন করে সে। স্থানীয়দের তৎপরতায় তাঁকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় একটি হাস্পাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ার এয়ারলিফট করে তাঁকে উড়িয়ে আনা হয় দিল্লীতে। শুক্রবার দিল্লীর সফদরজং হাসপাতালের ‘বার্ন ও প্লাস্টিক’ ডিপার্টমেন্টের প্রধান চিকিত্সক শলভ কুমার জানান, শুক্রবার রাত ১১ টা ১০ মিনিট নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই নির্যাতিতা এরপর ১১টা ৪০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।