সরকার যদি বেছে বেছে হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেয়, তা হলে দেশ জুড়ে ধর্মযুদ্ধ শুরু হবে না তো? । লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পেশ করার আগে এমন প্রশ্ন তুলল সদ্য বিজেপি জোট ছেড়ে আসা শিবসেনা। এদিন দলের মুখপত্র ‘সামনা’-য় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, সরকার হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ‘অদৃশ্য বিভাজন’ আনতে চায়। তারপরে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, সরকার যদি বেছে বেছে হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেয়, তাহলে ধর্ম নিয়ে হানাহানি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে দেশের ছয় দশকের পুরানো নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন আনতে চাওয়া হয়েছে। সেই বিল আইনে পরিণত হলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে। বিরোধীরা একবাক্যে বলছেন, প্রস্তাবিত আইন বৈষম্যমূলক। আমাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সেই নীতির বিরোধী।
‘সামনা’-র মুখপত্রে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ঠিক এই সময়েই বিলটি পেশ করা হচ্ছে কেন? তাতে লেখা হয়েছে, ‘দেশে সমস্যার অভাব নেই। এইসময় নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের নামে নতুন করে আর একটি সমস্যা ডেকে আনা হচ্ছে কেন? মনে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে অদৃশ্য বিভাজন চাইছে।’ পরে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘একথা ঠিক যে, হিন্দুস্তান বাদে বিশ্বে হিন্দুদের আর কোনও দেশ নেই। কিন্তু শুধু হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিক বলে স্বীকার করে আমরা কি ধর্মযুদ্ধের পথ পরিষ্কার করছি না।’
লোকসভায় শিবসেনার ১৮ জন সাংসদ আছেন। দলের তরফে এদিন বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি বহুদিন ধরেই এই বিলের বিরোধিতা করছে। বিহারেও অনেকে ওই বিলের বিরোধী। ওই রাজ্যে ইউনাইটেড জনতা দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। একইসঙ্গে শিবসেনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন জানিয়েছে, পাকিস্তানে হিন্দুদের ওপরে অত্যাচারের বিরুদ্ধে আপনি যেমন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রেও তাই নিন।