বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। দেশের এ হেন অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। এবার ভারতে অর্থনীতির ধুঁকতে থাকা স্বাস্থ্য নিয়ে ফের তোপ দাগলেন রাজন।
মোদী সরকারের ভুলগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে গিয়ে রাজন কখনও বিঁধেছেন তাদের মোদী-ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হাতে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রাখার স্বভাবকে। কখনও কাঠগড়ায় তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের অর্থনীতির সমস্যা গভীর হওয়ার কথা অস্বীকার করার চেষ্টাকে। এছাড়াও তিনি একদিকে যেমন সরব হয়েছেন অর্থনীতি নিয়ে ঘরে-বাইরে ঝড় তোলা প্রতিটি সমস্যা ও বার্তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাগিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধেও। তেমনি প্রশ্ন তুলেছেন সংস্কারের পথে কেন্দ্রের ‘বিস্ময়কর ভাবে গুটিয়ে থাকা’ নিয়েও।
রাজনের অভিযোগ, ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করা থেকে শুরু করে জমি অধিগ্রহণ, শ্রম আইনের মতো নানা বিষয়ে সংস্কারের কাজ এখনও পর্যন্ত অসমাপ্তই রয়েছে। এক পত্রিকায় রাজনের এই লেখা নিয়ে ফের সরগরম দেশ। ওই লেখায় ফের চাঁছাছোলা ভাষায় সরকারের প্রতিটি ভুলের কাটাছেঁড়া করেছেন তিনি। দাবি করেছেন, মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেছিল ছোট প্রশাসন, কিন্তু দক্ষ প্রশাসনিক পরিচালনা আনার বার্তা দিয়ে। অথচ সেই বার্তাটি মাঝেমধ্যে বুঝতে ভুল করছে তারাই। যে কারণে সাধারণ মানুষ ও বেসরকারি ক্ষেত্রের হাত থেকে দক্ষ ভাবে কাজ করার অধিকারটাই কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রাক্তন গভর্নরের দাবি, ‘আগের জমানায় হয়তো জোট সরকার কিছুটা অগোছালো ছিল। কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ আলগা করে অর্থনীতির উদারিকরণের রাস্তায় হেঁটেছিল তারা। অথচ এখন ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ, মন্ত্রীদের হাতে পূর্ণ ক্ষমতা না থাকা ও এগিয়ে চলার সঠিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব মিলেমিশে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, সেখানে সংস্কারের চেষ্টা তখনই গতি পায় যখন প্রধানমন্ত্রীর দফতর তাকে পাখির চোখ করে।’