দেশবাসীর প্রার্থনা এবং চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে গতকাল রাতে মারা গেছেন উন্নাও নির্যাতিতা। মেয়েকে এভাবে হারানোর শোকের মধ্যেই যোগী রাজ্যের পুলিশের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মৃতার বাবা। নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, “গায়ে আগুন লাগানোর আগেও বারবার তাঁর মেয়েকে খুনের হুমকি দিয়েছে অভিযুক্তরা। তাঁরা থানাতেও জানিয়েছিলেন সে কথা। কিন্তু, বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিশের তরফে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি”।
মৃত ওই তরুণীর বাবা জানিয়েছেন, “নভেম্বর মাসে জামিন পাওয়ার পর থেকেই শিবম ত্রিবেদী নামের ওই অভিযুক্ত লাগাতার তাঁর মেয়েকে খুনের হুমকি দিত। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিত। এমনকী, তাঁকেও ব্যক্তিগতভাবে খুনের হুমকি দেওয়া হত। কিন্তু, এসব সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি”
চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলে নির্যাতিতার বাবা বলেন, “বিজেপির শীর্ষ স্থানের নেতা বা প্রশাসনের শীর্ষস্থানের কোনও কর্তা তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। প্রশাসনের তরফে একজন ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট এসে দেখা করে গিয়েছেন শুধু। কিন্তু, তাতেও কিছু হয়নি।” ওই ধর্ষককে হয় হায়দ্রাবাদের মতো গুলি করে মারা হোক, নাহয় ফাঁসি দেওয়া হোক। নির্যাতিতা তরুণীর বাবা এমনটাই দাবি করেছেন।
দোষীদের চরম শাস্তির দাবি তুলেছেন মৃতার দাদাও। তিনি বলেন, “ওদেরকে মৃত দেখতে চাই। বোন বলেছিল আমায় প্লিজ বাঁচিয়ে রাখো। আমি ওদের মৃত্যু দেখতে চাই। বোন তো আর বেঁচে নেই। তাই ওই পাঁচজন বেঁচে থাকুক সেটাও চাই না।”
গতবছর উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের একটি গ্রামে গণধর্ষণ করা হয় বছর তেইশের ওই যুবতীকে। এবছর মার্চ মাসে দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও সে কিছুদিনের মধ্যেই জামিনও পেয়ে যায়। জামিন পেয়েই বদলা নেওয়ার চেষ্টা করে সেই নরপিশাচ। প্রকাশ্য রাস্তায় নির্যাতিতার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে ৪০ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয়েছে তাঁর। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, তাঁদের মেয়ের দেহ আর পোড়ানো হবে না। কারণ, পোড়ানোর মতো কোনওকিছু অবশিষ্ঠ নেই। তাঁকে কবর দেওয়া হবে।