মন্দার বাজারে তলানিতে ঠেকেছে চাহিদা। আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে কমছে জিএসটি থেকে আয়। রাজকোষের হাল এতটাই করুণ যে, রাজ্যগুলিকে জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণও মেটাতে পারছে না মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক। যার ফলে ৬ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী একজোট হয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে দেখা করে বকেয়া জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত মেটানোর দাবি জানালেন। তাঁদের প্রশ্ন, রাজ্যগুলি কি জেল, হাসপাতাল, স্কুল বন্ধ করে দেবে?
উল্লেখ্য, কেরালা, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও দিল্লী সরকারের অর্থমন্ত্রীরা এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন। তাঁরা অর্থমন্ত্রীকে বলেন, জিএসটি নিয়ে যে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করানো হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছে ৫ বছর ধরে রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ মেটাবে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন তা এখনও মেটানো হচ্ছে না? গোটা দেশ থেকে যে জিএসটি সংগ্রহ করা হয়, তার ৬০ শতাংশই রাজ্যগুলির রাজস্ব।
বৈঠকের ৬ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এ-ও বলেছেন, পেনশন বন্ধ করে দিতে হবে নাকি এরপর? আমরা আমাদের রাজ্যবাসীর কাছে কী জবাব দেব? এভাবে চলতে পারে না। আমাদের কি প্রতি মাসেই দিল্লী এসে এসে নিজেদের প্রাপ্য টাকা চাইতে হবে?
পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত সিং বাদল বলেছেন, রাজ্যগুলিকে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর আগে আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া নিয়ে আসতে হয়েছে দিল্লীতে। আবার নভেম্বর মাসের বকেয়াও যুক্ত হয়েছে। এভাবে আমাদের সম্মানে লাগছে। এটা কোনও ভিক্ষা নয়। আমরা কি রোজ রোজ দিল্লী এসে টাকার জন্য আবেদন নিবেদন করব? কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষতিপূরণ মেটাতে বাধ্য। জিএসটি আইনেই তা বলা হয়েছে। সংসদেও প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরই ওই বিল পাশ হয়েছে। তা হলে এখন কেন কেন্দ্র টাকা মেটাচ্ছে না!
আবার দিল্লীর অর্থমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া বলেছেন, জিএসটি বাবদ ৫০ হাজার কোটি টাকার তহবিলে রয়েছে। তা হলে কেন কেন্দ্র টাকা মেটাচ্ছে না? দিল্লী একাই পায় ৩৬০০ কোটি টাকা। বড় রাজ্যগুলির বকেয়া আরও অনেক বেশি। বাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অনেক আগেই এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি চিঠিও দিয়েছেন কেন্দ্রকে বকেয়া চেয়ে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্বীকার করেছেন যে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এসে সমস্যার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমরা বুঝতে পারছি সমস্যা হচ্ছে। আমি রাজ্যগুলিকে আশ্বস্ত করতে চাই যে যত দ্রুত সম্ভব বকেয়া জিএসটি মিটিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আমাকে ৬টি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন। এখনই বলা সম্ভব নয় যে কত টাকা বকেয়া রয়েছে রাজ্যগুলির। তবে এটা নিয়ে কোনও সংশয় নেই যে কেন্দ্রীয় সরকার ওই ক্ষতিপূরণ দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই আমাদের ওই জিএসটি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।