নাগরিকত্ব সংশোধন বিল (ক্যাব) এর তুমুল বিরোধিতা করছে আসাম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি রাজ্যর স্থানীয় সংগঠনগুলি৷ তাদের আশঙ্কা এই বিল পাশ হলে বাংলাদেশি হিন্দুরা উত্তর-পূর্বকে গ্রাস করে নেবে৷ আজ বছর চারেক হল এই নিয়ে বিরোধিতায় সরব আসামের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হীরেন গোঁহাই, কৃষক নেতা অখিল গগৈ, প্রাক্তন সাংবাদিক মনজিত মোহন্ত-সহ বহু বিশিষ্ট জন৷ তাঁরা ‘সেভ ফর আসাম’ সংগঠন গড়ে এর বিরেধিতা করছেন আসামের সার্বভৌমত্ব চাওয়া এদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করেছে গুয়াহাটি পুলিশ৷ অন্যদিকে চলো পাল্টাই এর মাধ্যমে ক্যাব ও এনআরসির তীব্র বিরোধিতা করছেন গর্গ চট্টোপাধ্যায় ও চন্দন চট্টোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন৷ ইতিমধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করেছে এনআরসির সমর্থকরা৷ অসমর্থিত সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে লতাশিল থানার পুলিশ দেশদ্রোহিতার মামলায় হীরেন, অখিল ও মনজিতকে গ্রেফতার করেছে৷
এদিকে গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার দীপক কুমার বলেন, ‘আমরা মামলা রজু করেছি। ৮ জানুয়ারির ওই সভায় এমন কিছু মন্তব্য শোনা গিয়েছে, যা তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।’ উল্লেখ্য নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল, ২০১৬-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ‘রাষ্ট্রদ্রোহে’র অভিযোগে আটক হলেন আসামের অন্যতম বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদ হীরেন গোহাঁই, সমাজকর্মী অখিল গগৈ এবং প্রাক্তন সাংবাদিক মনজিত মহন্ত। আমরা এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’ সূত্রের খবর, গুয়াহাটির লতাশিল থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০(বি), ১২১, ১২৩ এবং ১২৪(এ) ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের হয়েছে।উল্লেখ্য, রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে ‘সেভ অসম’ ফোরাম আয়োজিত ওই সভায় যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের স্বনামধন্য নাগরিকরা। সভা চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে কালো পতাকাও দেখানো হয়েছে।
বিজেপি সরকারের নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল ২০১৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, পার্সি, শিখ, জৈন এবং খ্রিষ্টান ধর্মালম্বী ‘শরণার্থী’দের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই বিলের বিরোধিতা করে দিন কয়েক আগেই অসমের বিজেপি সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে অসম গণ পরিষদ। কারণ অগপ মনে করছে, এই বিল আইনে রূপান্তরিত হলে বাংলাদেশি হিন্দুতে ভরে যাবে অসম। আর এ জন্যই তারা এই বিলের বিরোধিতা করছে। উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবর মাসে অসম গণ পরিষদ এই নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিল সে রাজ্যে।শউধু অসম নয় মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ডের এনডিএ শরিকরা এই নিয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ আর এসব দেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছেন বিশেষ আইনবলে উত্তর-পূর্বে ক্যাব প্রয়োগ করা হবে না৷