এমনিতেই রেলের বেসরকারিকরণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার। দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেই ধাপে ধাপে এগোচ্ছে তারা। কিন্তু এরই মধ্যে জানা গেল, তলানিতে রেলের আর্থিক হাল। হ্যাঁ, অপারেটিং রেশিওর হিসেবে গত দশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গেছে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে। এই রেশিও ছিল ৯৮.৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ, ১০০ টাকা আয় করতে গিয়ে রেলকে ব্যয় করতে হয়েছে ৯৮.৪৪ টাকা। খোদ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)–এর রিপোর্টেই উঠে এসেছে এই ছবি।
রেলের হিসেবের খাতা প্রসঙ্গে ক্যাগের পর্যবেক্ষণ, এনটিপিসি এবং ইরকন থেকে অগ্রিম না পাওয়া গেলে ওই বছর রেলের ব্যালান্সে ১৬৬৫.৬১ কোটি টাকা উদ্বৃত্তের বদলে ৫,৬৭৬.২৯ কোটি টাকার ঘাটতি থাকত।
সোমবারই সামনে এসেছে ক্যাগ রিপোর্ট। যাতে রেলের টিকিট নিয়ে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য ছাড় দেওয়া টিকিটে অনিয়ম হয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের পরে জন্ম হয়েছে এমন ৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য বরাদ্দ ছাড়ের সুযোগ নিয়ে। এমনকী ১০ বছর বয়সিকেও স্বাধীনতা সংগ্রামী টিকিট ইস্যু করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে ক্যাগ।
যাত্রীভাড়ায় লাভ-লোকসানের হিসাব দেখাতে গিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ — এই পাঁচ বছরে এসি ৩ টিয়ার একমাত্র শ্রেণি যেখানে লাভের মুখ দেখেছে রেল। এসি ২ টিয়ার শ্রেণিতে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। মাত্র ১৩.৬০ শতাংশ। শহর ও শহরতলিতে ইএমইউ ট্রেনে ৬৪.৭৪ শতাংশ লোকসান হয়েছে।
এ হেন রিপোর্ট সামনে আসার পরই সরব হয়েছে কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কটাক্ষ, ‘বিজেপি সরকার স্কিল তৈরি করতে পারে না, বিক্রি করতে পারে!’ কংগ্রেস নেত্রী টুইটে লিখেছেন, ‘ভারতীয় রেল দেশের লাইফলাইন। এখন এই রেলকেও বিজেপি সরকার তলানিতে নিয়ে গিয়ে ঠেকিয়েছে। অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মতো এখন রেলকেও বিক্রি করে দেবে এই সরকার।’