আগামী ৫ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার বুলি আউড়িয়ে দেশবাসীকে যে স্বপ্নের ফানুসে চড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এক বছর পেরনোর আগেই তা ফুটো হয়ে গিয়েছে। দেশে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার নেমে গিয়েছে ৪.৫ শতাংশে। যা গত ৬ বছরে সর্বনিম্ন। আগেই চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাসে কাঁচি চালিয়েছিল আইএমএফ থেকে শুরু করে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, মুডিজের মতো একাধিক মূল্যায়ন সংস্থা, এমনকি রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলও জানাল, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী এই আর্থিক বছরে ভারতে বৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ৫.১ শতাংশে, যেখানে তাদের আগের পূর্বাভাস ছিল ৬.৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়। এর পাশাপাশি, অর্থনীতির ঢিমে গতি বহাল থাকার দুঃসংবাদ শুনিয়েছে উপদেষ্টা সংস্থা ডান অ্যান্ড ব্রডস্ট্রিটও। তাদের মতে, বাজারে চাহিদা নেই। বিনিয়োগ এতটাই ঝিমিয়ে যে, শিল্পোৎপাদন দ্রুত বাড়ার অবস্থায় নেই।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নামার ক্ষত এখনও দগদগে। নাগাড়ে বিঁধছেন বিরোধীরা। জল্পনা চলছে, আগামী দিনে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কেন্দ্রের পদক্ষেপগুলি কতটা কাজে দেবে তা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে ভারতে ডান অ্যান্ড ব্রডস্ট্রিটের মুখ্য অর্থনীতিবিদ অরুণ সিংহের দাবি, বাজারে গাড়ি-বাড়ির চাহিদা বাড়ছে না। এক দিকে যেমন আয় কমছে সংস্থাগুলির, তেমনই তার বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে সরকারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে। সঙ্গে রয়েছে বেকারত্ব বাড়ার চাপও। ফলে সঙ্কট সামলাতে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি দ্রুত রূপায়ণে জোর দিতে হবে। যার হাত ধরে বাড়বে কর্মসংস্থান। ডান অ্যান্ড ব্রডস্ট্রিটের সঙ্গে এক মত ক্রিসিলও। বিশেষত আবাসন এবং আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রের বেহাল দশা বৃদ্ধির গতিকে ধাক্কা দিতে পারে বলে মনে করছে তারা। ক্রিসিলের দাবি, গত কয়েক বছরে জিএসটি, আবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং দেউলিয়া আইনের মতো সংস্কারের প্রভাব পড়েছে বৃদ্ধির ওপরে।