দলীয় বৈঠকেই তিনি বলেছিলেন, ‘মহারাষ্ট্র কিন্তু গোয়া বা মণিপুর নয়। মহারাষ্ট্রে আমি না অমিত শাহ, কে সরকার গড়ে — তার শেষ দেখে ছাড়ব।’ ‘মারাঠা স্ট্রংম্যান’ যে ফাঁকা বুলি আওড়াননি, তা এখন জলের মত স্পষ্ট। সেয়ানে-সেয়ানে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত শরদ পাওয়ারের কাছে হার মানতেই হয়েছে বিজেপির ‘চাণক্য’ অমিত শাহকে। কিন্তু প্রবল ক্ষমতাধর শাহ কী করে হেরে গেলেন পাওয়ারের কাছে?
‘পরাজয়’-এর জুতসই ব্যাখ্যা দিতে হোয়াটসঅ্যাপে বিজেপিই ছড়িয়েছিল পাল্টা ‘গল্প’। কিন্তু সে ‘গল্প’ প্রকাশ্যে আসায় ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। যাতে অস্বস্তিই বেড়েছে বিজেপিরই। কী সেই ‘গল্প’? মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে নাকি গচ্ছিত ছিল কেন্দ্রের ৪০ হাজার কোটি টাকা। যার ওপরে নাকি নজর ছিল শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেসের। সেই টাকা কেন্দ্রে ফেরত পাঠানোর জন্যই নাকি জেনেশুনে ৮০ ঘণ্টার ফডনবিশ সরকার গড়া হয়েছিল অজিত পাওয়ারের সমর্থনে!
‘গল্প’টি সমর্থকদের সামনে আউড়েছিলেন কর্ণাটকে বিজেপি সাংসদ অনন্ত কুমার হেগড়ে। ব্যাস, আর যায় কোথায়! সে কথা ক্যামেরাবন্দী হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বিরোধীরা প্রথমে বিশ্বাসই করেনি এই ‘গল্প’। এনসিপি নিজে প্রথমে বলে, ‘অবিশ্বাস্য’। পরে তারা সুর চড়িয়ে বলতে থাকে, ‘এ ঘটনা সত্যি হলে ইস্তফা দিন প্রধানমন্ত্রী।’ দিল্লীতে কংগ্রেসের মুখপাত্র বলেন, ‘এটা রাজ্যের মানুষের প্রতি ষড়যন্ত্র! প্রধানমন্ত্রী জবাব দিন।’ শিবসেনার সঞ্জয় রাউতও একই সুরে বলেন, ‘এ তো রাজ্যবাসীর সঙ্গে গদ্দারি!’
এরপরই বেকায়দায় পড়ে যায় বিজেপি। শেষে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয় সদ্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব খোয়ানো ফডনবিশকেই। তিনি জানিয়ে দেন, ওই ৮০ ঘণ্টায় কোনও নীতিগত সিদ্ধান্তই নেননি তিনি। ঘরোয়া মহলে অন্যান্য বিজেপি নেতারাও এখন বলছেন, ‘আসলে নিজের দলের চাণক্য এ ভাবে হেরে যেতে পারেন, মানতে তো কষ্ট হয়! তাই একটু মহিমা বর্ণনা করেছেন বিজেপি সাংসদ। না হলে কেউ কি শুধু টাকা ফেরতের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন? মুখ্যমন্ত্রী হতে পারলে ৮০ ঘণ্টায় গদি ছাড়েন কেউ? তাতে মোদী-শাহের মুখ পোড়ে না?’