দেখতে দেখতেই কেটে গেছে উৎসবের মরসুম। কিন্তু এখনও বিকল গাড়ি শিল্পের ইঞ্জিন। কারণ গাড়ির বাজারে রাহুমুক্তির কোনও লক্ষণই নেই। উল্টে নভেম্বরের বিক্রিবাটার হিসেবে মিলেছে আরও বড় রকমের দুর্দশার ইঙ্গিত। রবিবার টাটা মোটরস, হোন্ডা কারস ইন্ডিয়া, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা, মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া জানিয়েছিল গত মাসে বিক্রি কমে যাওয়ার কথা। সোমবার একই কথা জানাল টয়োটা কির্লোস্কর, অশোক লেল্যান্ড, বজাজ অটো, হোন্ডা মোটরসাইকেলের মতো সংস্থা।
আগের বছরের নভেম্বরের তুলনায় এই নভেম্বরে টাটা মোটরসের গাড়ির বিক্রি কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার বিক্রি কমেছে ৯ শতাংশ। আর অশোক লেল্যান্ডের কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়মমাফিক নভেম্বরের হিসেব পেশ করেছে টাটা মোটরস। তাতে জানানো হয়েছে, গত মাসে দেশের বাজারে ৩৮,০৫৭টি গাড়ি বিক্রি করেছে কোম্পানি। আগের বছরের নভেম্বরে এই বিক্রির অঙ্ক ছিল ৫০,৪৭০টি। রপ্তানি ও দেশের বাজার মিলিয়ে এই নভেম্বরে মোট বিক্রি ৪১,১২৪টি গাড়ি। আগের বছরে অঙ্কটা ছিল ৫৫,০৭৪। এক্ষেত্রে কমার হার ২৫ শতাংশের মতোই।
মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা তাদের হিসেবে জানিয়েছে, নভেম্বরে তারা রপ্তানি-সহ মোট ৪১,২৩৫টি গাড়ি বিক্রি করেছে। আগের বছরে এই সময়টায় বিক্রি হয়েছিল ৪১,১০১টি গাড়ি। অশোক লেল্যান্ড তৈরি করে বাণিজ্যিক গাড়ি। তাদের হিসেব বলছে, গত বছরের নভেম্বরে যেখানে বিক্রি হয়েছিল ১৩,১১৯টি গাড়ি, সেখানে এ বছরের নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১০,১৭৫টি গাড়ি। টয়োটা কির্লোস্করও জানিয়েছে, নভেম্বরে তাদের বিক্রি কমেছে ২২ শতাংশ। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৬০০ বাণিজ্যিক গাড়ি কম বেচেছে বজাজ অটোও।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বাজারে গাড়ির চাহিদা বাড়াতে আগস্টে কেন্দ্র যে পদক্ষেপ করেছিল, তাতে এখনও পর্যন্ত কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, সেটা পরিষ্কার। তার ওপরে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে বৃদ্ধির হার আরও কমেছে। কল-কারখানায় উৎপাদন বাড়েনি। উল্টে বাড়ছে ছাঁটাই। আর চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় তৈরি হয়েছে খরচে রাশ টানার প্রবণতা। উপরন্তু, আগামী এপ্রিল থেকে সব সংস্থাকে দূষণ কম রাখার নতুন মাপকাঠি সহায়ক বিএস-৬ গাড়িই তৈরি করতে হবে। তাই অনেকে এখন ভারত স্টেজ ৪ (বিএস-৪) মাপকাঠির গাড়ি তৈরি বন্ধ করছে। একাংশের মতে, এসবেরই প্রভাবও পড়েছে গাড়ি বিক্রিতে।