হায়দ্রাবাদের তরুণী পশু চিকিৎসকের গণধর্ষণে ফুঁসছে গোটা দেশ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন নিন্দার ঝড় উঠেছে। তেমনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে মানুষ৷ কোথায় মোমবাতি মিছিল তো কোথাও প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ৷ এবার তার প্রভাব পড়ল সংসদেও। ‘ধর্ষণকারীদের জনসমক্ষে পিটিয়ে মেরে ফেলা উচিত। কারণ, এমন কঠোর শাস্তি দিতে হবে যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’ রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীন ঠিক এই ভাষাতেই গর্জে উঠলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন৷
জয়ার দাবি, ‘সরকার আইন পাশ করে ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু প্রশ্ন হল, তার পরেও নিরীহ মেয়েরা কি সুবিচার পেয়েছে? নির্ভয়াও কি সুবিচার পেয়েছিল?’ দৃশ্যতই এদিন ক্ষুব্ধ ছিলেন অমিতাভ জায়া। তিনি বলেন, ‘এই সংসদে দাঁড়িয়ে এ ধরনের ঘটনা নিয়ে আমি কতবার যে বলেছি, ক্ষোভ প্রকাশ করেছি তার ইয়ত্তা নেই। তা সে নির্ভয়া কাণ্ড হোক, কাঠুয়া কাণ্ড আর এখন বলছি তেলেঙ্গানার ঘটনা নিয়ে। আমার মনে হয়, জনগণ এখন সরকারের থেকে একটা সুস্পষ্ট জবাব চাইছে। আর কতদিন এমন চলবে। আর কত যন্ত্রণা কত অত্যাচার সহ্য করতে হবে মেয়েদের?’
এখানেই থামেননি সমাজবাদী পার্টি নেত্রী। তাঁর প্রশ্ন, ‘সরকার কী করছে? কীভাবে তাঁরা এই ঘটনার মোকাবিলা করছে? যাঁরা নিগৃহীতা হয়েছেন তাঁদের যোগ্য বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে কী কোনও ন্যায়বিচার করা হয়েছে? আমি কারোর নাম নিচ্ছি না৷ তবে নারী নিরাপত্তায় কি সরকারের দায়বদ্ধ থাকা উচিত নয়? এই ঘটনার ঠিক একদিন আগে একই রকম ঘটনা ঘটেছে তেলঙ্গানায়৷ তারপরেও কেম রোখা গেল না এমন ঘটনা? আমার প্রশ্ন হল, পুলিশ তথা নিরাপত্তা বাহিনীর কি কোনও দায়িত্ব নেই? কেন ঘটনা ঘটার পর তবেই সবাই নড়ে চড়ে বসবে?’ যাঁরা এই ধরনের আক্রমণ থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হন তাঁদের ‘নিজেদের লজ্জা’ হওয়া উচিৎ বলেই মনে করেন জয়া।
তবে জয়া একাই নন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যসভায় ক্ষোভ উগরে দেন অন্য সাংসদরাও। কংগ্রেস সাংসদ আমী যাজ্ঞিক বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে সামাজিক সংস্কার’ করার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে একজোট হয়ে পদক্ষেপ করতে হবে৷ রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘গোটা দেশ মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সামাজিক রোগের প্রতিকারের পথ বের করতেই হবে। এমন পরিবেশ দেশে গড়ে তুলতে হবে যাতে এ ধরনের ঘটনাই না ঘটে।’ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ধর্ষণকারীদের কোনও ক্ষমা নয়।’