এবার হায়দ্রাবাদের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও পুড়িয়ে খুন করার ঘটনাতেও লাগানো হল ধর্মের রঙ। আর এই অভিযোগ উঠল খোদ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনের মধ্যে কেবল এক সংখ্যালঘু অভিযুক্তের পরিচয়কেই সামনে নিয়ে এসে প্রচার চালানো হল ফেসবুক-টুইটারে। ধর্ষকের ধর্মীয় পরিচয় টেনে এনে এমন প্রচারকে পাল্টা সমালোচনাও করেছেন নেটিজেনরা।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরেই শুক্রবার টানা এমন ‘সাম্প্রদায়িক’ প্রচার শুরু হয় টুইটারে। পুলিশ চার অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শুধুমাত্র এক জনের নাম সামনে এনে তাঁর শাস্তির দাবি তোলা হয়। টুইটের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ হাজার। ওই দাবিতে তৈরি হ্যাশট্যাগ দীর্ঘক্ষণ ট্রেন্ডিংও ছিল টুইটারে। সমাজমাধ্যমে বিজেপি সমর্থক পরিচয়ের অজস্র প্রোফাইল, তেলেঙ্গানার এক বিজেপি বিধায়ক, এমনকি বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য অবধি এক অভিযুক্তের নাম সামনে এনে সরব হয়েছেন।
পুরো তথ্য আড়াল করে, কেবল আংশিক তথ্য সামনে এনে ঘটনায় সাম্প্রদায়িক বয়ান নির্মাণের চেষ্টাই নয়, তাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ভুয়ো খবরও ছড়ানো হয় বিজেপির তরফে। প্রচার চলে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত শামশাবাদেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত চার জনই নারায়ণপেট জেলার বাসিন্দা। তেলঙ্গানার গোশামহলের বিজেপি বিধায়ক রাজা সিংহ টুইটারে একটি ভিডিয়ো বার্তা দেন। তাতেও কেবল এক সংখ্যালঘু অভিযুক্তের নাম জানান তিনি। অনেকে শেয়ারও করেন সেই ভিডিয়ো। এ ভাবেই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এমন প্রচারে শামিল হন অভিনেত্রী পায়েল রোহতগিও। ‘পায়েল রোহতগি অ্যান্ড টিম-ভক্তস অব ভগবান রাম’ নামের হ্যান্ডল থেকে এর আগে রামমোহন রায়কে ‘দেশদ্রোহী’ ও ‘ব্রিটিশদের চামচা’ বলে উল্লেখ করেন বিতর্কে জড়ান পায়েল। তবে নেটিজেনদের অনেকেই রিপোর্ট করায় টুইটার পায়েলের অ্যাকাউন্ট পরে বন্ধ করে দেয়।
এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এ বছরের গোড়াতেই উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে এক শিশুকন্যার পচাগলা দেহ উদ্ধারের পর সাম্প্রদায়িক প্রচার চলেছিল সমাজমাধ্যমে। তেলেঙ্গানার ঘটনাতেও শামশাবাদের ডিসিপি প্রকাশ রেড্ডি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা কোনও ভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়। অভিযুক্তদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়েরই লোক রয়েছে। ধর্মের সঙ্গে, এই ঘটনাকে জড়ানো একেবারেই ভুল হবে।’’