লোকসভা নির্বাচনের পরে হিড়িক উঠেছিল রাজনৈতিক দলবদলের। ভোটের ফল দেখে এবং গেরুয়া বাহিনীর হুমকির মুখে বহু নেতা-কর্মীই যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু কিছুদিন গড়াতেই সকলে নিজেদের ভুল বুঝতে পারছেন। গেরুয়া সঙ্গ ত্যাগ করে ফের তৃণমূলেই যোগ দিচ্ছেন। উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর আরও তরান্বিত হল সেই ধারা। শুক্রবার ফের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ঘরে ভাঙন ধরিয়ে ভাটপাড়া পুরসভার এক কাউন্সিলার বিজেপি ছেড়ে যোগ দিলেন ঘাসফুল শিবিরে। যার ফলে তৃণমূলের বোর্ড পুনরুদ্ধার এখন শুধু মাত্র নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়াল। কারণ মোট ৩৬ জনের পুরবোর্ডে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে হল ১৮। গতকাল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেন ওই ১৮ সদস্য।
উল্লেখ্য, বিগত লোকসভা ভোটের মুখে অর্জুন দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরপরই ভাটপাড়া পুরসভাও গেরুয়ায় বদলে যায়। তবে বৃহস্পতিবার তিন বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের অভাবনীয় সাফল্যের প্রেক্ষিতে শুধু বিজেপি শিবিরের কাউন্সিলারই নন, বিভিন্ন এলাকায় নিচুতলার কর্মীদের মধ্যেও মোহভঙ্গ হয়েছে। বিজেপিত্যাগী ওই পুর প্রতিনিধিকে স্বাগত জানাতে গিয়ে এমনটাই দাবি করেন জ্যোতিপ্রিয়। মোট ৩৬ জনের পুরবোর্ড, একজন ইস্তফা দিয়েছেন, একজন সিপিএমের, আরেকজন প্রয়াত এবং তৃণমূলের পাঁচ কাউন্সিলার ছাড়া বাকিরা পদ্ম শিবিরের চলে গিয়ে বোর্ড দখল করেন। তভে যেসব কাউন্সিলার বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১২ জন গত মাসেই পুরনো দলে ফিরে এসেছিলেন। এবার আরও একজন যোগ দেওয়ায় ভাটপাড়া পুরসভায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ১৮ হল বলে জানান জ্যোতিপ্রিয়।
এ প্রসঙ্গে, পরিষদীয় দফতরের প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় বলেন, কোথাও ভুল বুঝিয়ে, কোথাও ভয় দেখিয়ে তৃণমূলের কাউন্সিলারদের ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেখানকার মানুষ টের পেয়ে গিয়েছে, পুর পরিষেবা বন্ধ, বিজেপি পরিচালিত পুর প্রশাসন সর্বার্থে ব্যর্থ। জানুয়ারির মধ্যেই নতুন বোর্ড গঠনের ব্যাপারে নিশ্চিত নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। তিনি বলেন, এটা শুধু বোর্ড পুনর্দখল নয়, বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক জয়ও বটে। উপনির্বাচনে মানুষ রায় দিয়েছে। এবার একে একে রাজ্য থেকে বিজেপিকে সাফ করাই আমাদের প্রধান কাজ। আর তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ জানিয়েছেন, পুরবিধি মেনে বিগত অনাস্থার পর ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে। সেই মেয়াদ আগামী ৪ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। তাই ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপি পরিচালিত ওই পুরসভায় অনাস্থা এনে ভোটাভুটির দাবি তুলবে তৃণমূল।