আগামী ৫ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার বুলি আউড়িয়ে দেশবাসীকে স্বপ্নের ফানুসে চড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অবশেষে ফুটো হল সেই রংচঙে ফানুস। শুক্রবার বিকেলেই জানা গেল হুমড়ি খেয়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। অর্থনীতির সূচক জিডিপিতে ঘটেছে রেকর্ড পতন। ইতিহাস গড়ে শেষ ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার নেমেছে ৪.৫ শতাংশে। যা ছ’বছরে সর্বনিম্ন। প্রথম ত্রৈমাসিকে এই হার ছিল ৫ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, মোদী সরকার বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল, তার তুলনায় ঘাটতির পরিমাণ ১০২.৪ শতাংশ বেশি। হিসাবমতো বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭.২ লক্ষ কোটি টাকা। সরকারের হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম সাত মাস তথা এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে কর বহির্ভূত খাতে আদায় হয়েছে ৬ লক্ষ ৮৩ হাজার কোটি টাকা। সেই তুলনায় খরচের বহর অনেকটাই বেশি। তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লক্ষ ৫৫ হাজার কোটি টাকায়।
প্রসঙ্গত, অর্থ মন্ত্রকের নীতি নির্ধারকদের টোটকা যে কাজে আসেনি, তা স্পষ্ট। সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমে ৪.৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে আগেই রয়টার্সের তরফে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সেটাকেই সত্যি করে তুলল মোদী সরকারের অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতির এমন পরিস্থিতি অবশ্য প্রথমবার নয়, এর আগেও ২০১৩ সাল নাগাদ এমন করুন হাল হয়েছিল অর্থনীতির। সেবার জানুয়ারি থেকে মার্চ ত্রৈমাসিকে জিডিপি নেমেছিল ৪.৩ শতাংশে। এবার মোদী সরকারের আমলে সে রেকর্ডও ভাঙার উপক্রম হল।
তবে এই ব্যাপক মন্দার পিছনে অর্থনীতির বিশেষজ্ঞদের দাবি, দেশের পণ্যের চাহিদা ও বেসরকারি লগ্নি হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি দেশের মাটিতে বিদেশী লগ্নিও প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। উপরি পাওনা হিসাবে আছে বিশ্ববাজারে মন্দার জেরে রফতানিতে টান। সবকিছু মিলে মিশেই করুন হাল দেশের অর্থনীতির। একইসঙ্গে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী দিনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। আগামী ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর বৈঠক রয়েছে আরবিআইয়ের। সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।