রাজ্যের ৩ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপির ‘হোয়াইট ওয়াশ’ নিশ্চিত হতেই বিজেপিকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুরে এক বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমকে ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ঔদ্ধত্য আর অহঙ্কারের ফল পেল বিজেপি। এই জয় মানুষের জয়।’ পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার গঠনের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়া নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, বিজেপি যেন ওয়াশিং মেশিন হয়ে গিয়েছে। ওখানে যোগ দিলেই সবাই পরিষ্কার হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনের ফল যে মমতাকে স্বস্তি দিয়েছে, এদিন তাঁর গলার আত্মবিশ্বাসের সুরই তা বলে দিচ্ছে।
ফোন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দেশভাগ, জাতিভাগ, সংস্কৃতির ওপরে অত্যাচার চলছে। সেই সময় জনতার এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। কেউ উপলব্ধি না করতে পারলে বুঝতে পারবে না। মা-মাটি মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কৃতিত্ব ভোটারদের। গণতন্ত্রে জনতার আশীর্বাদ শুভকামনাই শেষ কথা বলে।’
মহারাষ্ট্রে বৃহত্তম দল হলেও সরকার গঠন করতে পারেনি বিজেপি। সে রাজ্যে সরকার গড়তে চলেছে এনসিপি-শিবসেনা-কংগ্রেস জোট। সে নিয়ে মমতার প্রতিক্রিয়া, মহারাষ্ট্রে পিছিয়ে পড়ল বিজেপি। এনসিপি-কংগ্রেস-শিবসেনা জোট বেঁধেছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদ নিয়ে কাজ করে শিবসেনা। আমরাও হিন্দু ধর্মের লোক। তবে সবাইকে নিয়ে চলার পক্ষে। যারা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করেছে, তারাও বিজেপিকে ছেড়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাতের অন্ধকারে এনসিপি থেকে অজিত পাওয়ারকে ভাঙিয়ে এনে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। শনিবার সাত সকালে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন দেবেন্দ্র ফডনবিশ। উপমুখ্যমন্ত্রী হন অজিত। আর আশ্চর্যজনক ভাবে পরের দিনই ৭০ হাজার কোটি টাকার সেচ কেলেঙ্কারি থেকে ক্লিনচিট পেয়ে যান শরদ পাওয়ারের ভাইপো। এক সময় যাঁকে ফডনবিশই বলেছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত অজিত দাদা চাক্কি পিসিং, চাক্কি পিসিং। তাঁর সঙ্গে কোনওরকম সমঝোতা করবে না বিজেপি।
ফলে অজিতের সঙ্গে জোট করায় বিজেপির স্বচ্ছ প্রশাসনের দাবি ঘিরেই উঠেছিল বড়সড় প্রশ্ন। তা আরও উসকে দিয়েছিল অজিতের ক্লিনচিট। সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ না করেই আজ মমতার কটাক্ষ, বিজেপির ঔদ্ধত্য বেড়ে গিয়েছে। একেক জন নেতা নিজেকে কী মনে করছেন! বাপরে বাপ। আয়নায় মুখ দেখে না নিজেদের। শতছিদ্র নিজেদের। অথচ যেন ওয়াশিং মেশিন হয়ে গিয়েছে বিজেপি। সবাই চোর, দুর্নীতিবাজ, দেশদ্রোহী। ওদের ওয়াশিং মেশিনে যাও পরিষ্কার হয়ে চলে আসবে। এটা বিভ্রান্তিমূলক রাজনীতি।
মমতা আরও বলেন, ‘লোকসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির দম্ভ বেড়ে গিয়েছিল। এনআরসি করে দাও, একে নাগরিকত্ব দাও ওকে দেশ থেকে বের করে দাও। যেন জমিদারি ওদের। নাগরিকত্ব দেওয়ার ওরা কে! এমনিতেই তো সবাই এ দেশের নাগরিক।’ তাঁর দাবি, এত ঔদ্ধত্য আর অহঙ্কারেরই ফল পেল বিজেপি। মমতার কথায়, ‘সব ধর্ম, জাতি ও ভাষাভাষি মানুষ যে তৃণমূলের পাশে রয়েছেন, আমাদের সমর্থন করছেন তা এই ফলাফলেই পরিষ্কার। এই জয় তাই মানুষের জয়।’