কালিয়াগঞ্জ এতদিন ছিল কংগ্রেসের দখলে। আর খড়গপুর প্রথমে কংগ্রেসের দখলে থাকলেও পড়ে তা ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই দুইটি কেন্দ্রই রয়ে গিয়েছিল অধরা। কিন্তু আজ উল্টে গিয়েছে পাশা। আজ উপনির্বাচনের ফলে দেখা গেল, এই দুটি কেন্দ্রেই প্রথমবার ফুটেছে ঘাসফুল। করিমপুরেও জয় প্রায় নিশ্চিত। তিনে তিন হওয়ার ইঙ্গিত মিলতেই এই বড় জয়ের কৃতিত্ব মা-মাটি-মানুষকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘ঔদ্ধত্য আর অহঙ্কারের ফল বিজেপি। এই জয় মানুষের জয়।’
প্রসঙ্গত, এদিন সকাল থেকেই বাড়িতে বসে টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে টেলিফোনে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছিলেন দুই কেন্দ্রের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে। তিন আসনেই তৃণমূলের জয় যে অনিবার্য তা আন্দাজ করেই এবার নিজের প্রতিক্রিয়া দিলের মমতা। তাঁর কথায়, ‘লোকসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির দম্ভ বেড়ে গিয়েছিল। এনআরসি করে দাও, একে নাগরিকত্ব দাও ওকে দেশ থেকে বের করে দাও। যেন জমিদারি ওদের। নাগরিকত্ব দেওয়ার ওরা কে! এমনিতেই তো সবাই এ দেশের নাগরিক।’
উল্লেখ্য, করিমপুরে যে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে তা শাসক দলের নেতারা আগেই বলছিলেন। কারণ করিমপুর ২ নম্বর ব্লক সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। কিন্তু কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনটি পাওয়া তৃণমূলের কাছে বড় জয়। ষোল সালের বিধানসভা ভোটেও কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেসের কাছে ৪৬ হাজার ভোটে হেরেছিল তৃণমূল। উনিশের লোকসভা ভোটে তৃণমূল সেখানে পিছিয়ে ছিল ৫৬ হাজারেরও বেশি ভোটে। সেই ব্যবধান কমিয়ে দিয়ে তৃণমূল যে কালিয়াগঞ্জে ২৩০৪ ভোটে জিতেছে তা আদতে বিপুল জয়।
একই ভাবে বরাবরই খড়গপুর বিধানসভা আসন অধরা ছিল তৃণমূলের কাছে। ষোলোর ভোটে এবং উনিশের লোকসভা ভোটে খড়গপুরে জিতেছিল বিজেপি। লোকসভায় সেখানে ৪৫ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানের জিতেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু মমতার উন্নয়নে ভর করে সেই বিশাল ব্যবধানও এবার মুছে ফেলেছে তৃণমূল। মমতা এদিন বলেন, বিজেপি এর আগে কালিয়াগঞ্জের রাজবংশীদের ভুল বুঝিয়েছিল। কিন্তু এবার আর তাঁরা বিজেপি-র ফাঁদে পা দেননি। তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। খড়গপুরে আবার অবাঙালিরা আমাদের প্রচুর ভোট দিয়েছেন। সব ধর্ম, জাতি ও ভাষাভাষি মানুষ যে তৃণমূলের পাশে রয়েছেন, আমাদের সমর্থন করছেন তা এই ফলাফলেই পরিষ্কার। এই জয় তাই মানুষের জয়।