মঙ্গলবারই যবনিকা পতন হয়ে গেছে মহারাষ্ট্রের ‘মহা’-নাটকের। তারপর গতকাল সন্ধ্যায় পূর্বসিদ্ধান্ত মত শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে দলনেতা হিসেবে বেছে নিল শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের ‘মহা’-জোট ‘মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ি’। মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পদে উদ্ধবকেই যে তাঁরা মনোনীত করেছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তা-ও আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন সেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের নেতারা। সভায় উপস্থিত সমস্ত বিধায়করাই এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে মেনে নিয়েছেন। অর্থাৎ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন উদ্ধব। যা কিনা কেবল সময়ের অপেক্ষা। সিদ্ধান্ত হয়েছে নয়া জোটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ২৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার শপথ নেবেন উদ্ধব ঠাকরে। যদিও আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল রবিবার তিনি শপথ নেবেন।
সর্বসম্মত ভাবে তাঁকে মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার পর, এক ভাষণে উদ্ধব জানিয়ে দেন, ‘মহারাষ্ট্রে কৃষকদের দুর্দশাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই মিলে যে গুরুদায়িত্ব দিচ্ছেন, আমি তা গ্রহণ করছি। আমি একা নই, আপনারা প্রত্যেকে আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। সবাই মিলে রাজ্যের কৃষকদের দুঃখ দূর করব। শিবাজী মহারাজ যে মহারাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা সেই মহারাষ্ট্রই তৈরি করব।’ তাঁর মতে, ‘আজ যা ঘটল, সেটাই প্রকৃত গণতন্ত্র।’ তাঁকে সমর্থন করার জন্য কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকেও তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। উদ্ধবের কথায়, ‘রাজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছি, এটা আমি স্বপ্নেও দেখিনি। সোনিয়া গান্ধী-সহ অন্যদের আমার ধন্যবাদ। একে অপরের ওপর আস্থা রেখে, আমরা দেশকে নয়া দিশা দিতে চলেছি।’ একইসঙ্গে বিজেপির দিক থেকে আসা নানা কটাক্ষের পাল্টা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দেবেন্দ্র ফডনবিশের তোলা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি প্রস্তুত। আমি কোনও কিছুতেই ভয় পাই না। মিথ্যে কথা বলা কখনই হিন্দুত্বের মধ্যে পড়ে না।’
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে এনসিপির প্রধান জয়ন্ত পাতিল গতকাল সভায় ‘মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ি’র প্রধান হিসেবে উদ্ধব ঠাকরের নাম প্রস্তাব করেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও তাঁকে তুলে ধরা হয়। কংগ্রেস বিধায়ক বালাসাহেব থোরাট এই প্রস্তাব সমর্থন করেন। এর আগে মুম্বইয়ের এক হোটেলে তিন দলের বৈঠকে শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে তিন পার্টির মিলিত জোট ‘মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ি’ গঠনের প্রস্তাব আনলে, এনসিপির নবাব মালিক ও কংগ্রেসের নীতীন রাউত তা সমর্থন করেন। বৈঠকের আগে এনসিপি মুখপাত্র নবাব মালিক বলেন, উদ্ধব ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রী করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন খোদ শরদ পাওয়ার। জানা গেছে, ২৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার উদ্ধব ঠাকরেকে আমন্ত্রণ জানান।ওই দিন শিবাজী পার্কে শপথ নেবেন মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে শপথ নেবেন এনসিপি এবং কংগ্রেসের দুই উপমুখ্যমন্ত্রীও। শপথ নেবেন মন্ত্রীসভার বাকি মন্ত্রীরাও।