রাজ্যের তরফে সংবিধান দিবস পালন উপলক্ষ্যে রাজ্যপালকে আহ্বান জানানো হয়। তবে এদিন বিধানসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সামান্য সৌজন্য বিনিময়ের ধারকাছ দিয়ে গেলেন না ধনকড়। তাতেই ক্ষুদ্ধ হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এদিন তাঁর কথায় উঠে আসে মহারাষ্ট্র প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, সংখ্যা না থাকলে ইস্তফা তো দিতেই হবে। চুপিচুপি সরকার গড়া কেন হল?
তিনি বলেন, “আমরা মধ্যরাত্রে স্বাধীনতার কথা শুনেছি, কিন্তু মধ্যরাত্রে সরকার কোনওদিন দেখিনি। কেউ এই বিষয়ে জানত না। এই ঘটনা গণতন্ত্রের গরিমা নষ্ট করে দিয়েছে। সারা দেশের মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন আসছে কি দরকার ছিল মধ্যরাত্রে চুপি চুপি সরকার গড়ার? মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, ভালো কথা। কিন্তু ওনার শপথ নেওয়া উচিত হয়নি।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে বিধানসভায় যখন রাজ্যপাল পৌঁছন, তখন সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেন কোনও কথা বা শুভেচ্ছা বিনিময় না করেই এগিয়ে চলে যান তিনি। আম্বেদকরের মূর্তিতে মালা দেওয়ার আগেই অবশ্য কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নানকে দেখেই প্রশ্ন করেন, ‘কেমন আছেন?’
এরপরই পালটা আসরে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সরাসরিই বলেন, ‘রাজ্যপাল সিলেকটেড পোস্ট। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ইলেকটেড পোস্ট, যেমন প্রধানমন্ত্রীও ইলেকটেড পোস্ট।’ রাজ্যপালের কথা না বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শেষ যিনি রাজ্যপাল ছিলেন তাঁর সঙ্গেও এরকম সম্পর্ক ছিল না। প্রধানমন্ত্রীও দেখা হলে আমার সঙ্গে কথা বলেন।’
মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট নিয়ে কিছুদিন আগেই কটাক্ষ করেছিলেন জগদীপ ধনখড়। এদিন তা নিয়ে পালটা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘কার কাটআউট কখন লাগবে, সেই নিয়েও কথা হচ্ছে। রাজ্যপাল কাটআউট লাগাবে না রাজনৈতিক নেতারা কাটআউট লাগাবে?’
এখানেই থামেননি তিনি। হেলিকপ্টার ইস্যু নিয়ে এদিন মমতা বলেন, ‘এমার্জেন্সি হলে আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করি। আগের রাজ্যপাল তো অনেকবার হেলিকপ্টার নিয়েছেন, তখন তো অসুবিধা হয়নি।’ এনআরসি নিয়েও এদিন আবারও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে বলা হচ্ছে একটা বিশেষ ধর্মের লোক পাবে না। কিন্তু আইনের চোখে সবাই সমান। এখনও দেশে কিছু মানুষ আছে যারা জেলে যাওয়ার জন্য তৈরি আছে। কিন্তু কিছুতেই মাথা নোয়াব না।’
উল্লেখ্য, রাজ্যে রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নেওয়ার দিন রাজ্য সরকার জগদীপ ধনখড়কে সদর অভ্যর্থনা জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। একসঙ্গে ভালোভাবে রাজ্য চালানোর কথাও বলেছিলেন মমতা। কিন্তু ধনখড়ের কাজকর্মে সেরকম কোনো আভাসই পাওয়া যায়নি। রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত বেড়েছে ক্রমশ। রাজ্য চেষ্টা চালিয়েছে সম্পর্ক শীতল করার, কিন্তু সেটা কমার বদলে বেড়েছে।