সোমবার বিকেলের দিকেই শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত টুইট করে জানিয়েছিলেন, মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড হায়াতে আজ সন্ধ্যে ৭টায় ১৬২ জন বিধায়ককে হাজির করাবেন সেনা-কং-এনসিপি জোট। এমনকি টুইটে রাজ্যপালকেও বলেছিলেন, আসুন নিজের চোখে দেখুন৷ এবার নিজেদের কথামতই, সোমবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলের বলরুমে শক্তি প্রদর্শন করে দিলেন শরদ পাওয়ার এবং উদ্ধব ঠাকরেরা। ২৮৮ টি আসনের বিধানসভার ১৬২ জন বিধায়কই উপস্থিত থাকলেন সেখানে।
সাগরপাড়ে সূর্য অস্ত যেতেই শুরু হয় তোড়জোড়। লাল কার্পেটে মোড়া মঞ্চ। যেন সমস্ত ক্যামেরা এসে ভিড় করেছে সেখানে। বাইরেও থিকথিকে ভিড় সাংবাদিকদের। এক ঘণ্টা আগে থেকে হোটেলে আসতে থাকেন তিন দলের শীর্ষ নেতারা। একে একে শহরের তিন বিলাসবহুল হোটেলে অপেক্ষারত বিধায়করা এলেন হোটেলে। হাত নেড়ে, আনন্দে আটখানা যেন সবাই। কদিন আগেই যে বিজেপি ভোরবেলা ঘুম থেকে তুলে ঘোল খাইয়ে দিয়েছিল, সেসব চাপ কারোর চোখে মুখে নেই। এলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে, আহমেদ প্যাটেল, সুপ্রিয়া সুলে, শারদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে, অশোক চৌহান, আরও সবাই।
অবশেষে এল সেই মুহূর্ত। শপথ নেওয়ার ভঙ্গিতে ওঁরা মানে ১৬২ জন বিধায়ক উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, ‘আমি কোনও প্রস্তাবের কাছে নতিস্বীকার করব না। আমি বিজেপিকে কোনওভাবেই সাহায্য করব না। আমি দল-বিরোধী কাজে অংশ নেব না।’ এ ভাবে মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলে নিজেদের সংখ্যার প্রমাণ দিল, মহা বিকাশ আগাড়ি। যাতে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস বাদেও ছিলেন সপা ও কিছু নির্দল বিধায়ক।
এর ঠিক আগেই শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ভোকাল টনিক দেওয়ার কাজটা সেরে ফেলেছেন। বলেছেন, ‘এখন আর সত্যমেব জয়তে নেই, হয়ে গেছে সত্তামেব জয়তে।’ অর্থাৎ ক্ষমতার আপাতত জয় হয়েছে। তিনি পরক্ষণেই বলেন, ‘কিন্তু তা আমরা সবাই মিলে জোট বেঁধে তা হতে দেব না। সত্যেরই জয় হবে, সত্তা বা ক্ষমতার নয়! আমরা সত্যমেব জয়তের আদর্শে বাঁচি।’ হাততালিতে ফেটে পরে গ্র্যান্ড হায়াতের ব্যাঙ্কোয়েট। এর পরেই এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেন, ‘আস্থাভোটের দিন যদি কেউ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তা হলেও দল থেকে তাঁর সদস্যপদ যাবে না।’ এ কথা বলার কারণ, পুরোনো নিয়মে অজিত পাওয়ার এখনও হুইপ জারি করার ক্ষমতা রাখেন। ফলে তিনি যদি তা করেন, সে ক্ষেত্রে বিধায়করা ভয় পেতে পারেন। সদস্যপদ চলে যাওয়ার ভয়। তাই তিনি ব্যক্তিগত আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমি আছি, তোমাদের কিচ্ছু হবে না।’