প্রত্যেক বছরই বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে শহরের অনেক ওয়ার্ড। রাজ্যের অন্য পুর এলাকার মতো খাস কলকাতাতেও এই ছবি খুব চেনা। বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা হলেও পৃথকীকরণের ব্যবস্থা রয়েছে শহরের হাতে গোনা ওয়ার্ডে। রাজ্যের অনেক পুর এলাকায় বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের ব্যবস্থায় এখনও কিছু ফাঁক রয়ে গিয়েছে। আবর্জনা ফেলা হচ্ছে মাঠ বা জলাশয়ে। সেখানে জন্ম নিচ্ছে মশা, বাড়ছে মশাবাহিত রোগ। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রতিটি পুর এলাকায় ‘পরিবেশ সেনা’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই বাহিনীর কাজ হবে পুর এলাকার পরিচ্ছন্নতা এবং পরিবেশ রক্ষা করা।
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল আর্বান এমপ্লয়মেন্ট স্কিমের অর্থে এ কাজে নিযুক্ত কর্মীদের মজুরি দেওয়া হবে। এ জন্য চলতি আর্থিক বছরে বরাদ্দ রয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। এত দিন পর্যন্ত এই প্রকল্পে শহুরে এলাকার যে কোনও ধরনের কাজে নিযুক্ত কর্মীদের মজুরি দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। তবে প্রকল্পটির খোলনলচে বদলে অদূর ভবিষ্যতে পুর এলাকার পরিবেশ রক্ষা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং বিশেষত মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের কাজেই তাঁদের ব্যবহার করা হবে।
বর্তমানে কলকাতার পুরসভার বড় রাস্তাগুলি ঝাঁট দেওয়া, জঞ্জাল সংগ্রহের কাজে যুক্ত রয়েছেন কয়েকশো কর্মী। জঞ্জাল সাফাইয়ে রয়েছে কলকাতা পুরসভার নির্দিষ্ট ব্যবস্থা। তবে রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলির পরিস্থিতি একইরকম নয়। রাজ্যের ছোট, মাঝারি পুরসভাগুলিতে জঞ্জাল সাফাইয়ের মতো কাজে কিছু কর্মী নিযুক্ত থাকলেও, এলাকার ঝোপঝাড় পরিষ্কার, নর্দমা সাফাইয়ের মতো কাজই মোটের উপরে তাঁরা করে থাকেন। তবে এ বার রাজ্যের সমস্ত পুর এলাকাতেই এই ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ঘটাতে চাইছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। শুধুমাত্র নালা নর্দমা সাফ করাই নয়, নর্দমায় যাতে আবর্জনা না জমে তার উপরও নজরদারি চালাবেন তাঁরা। মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় কাজেও তাঁরাই যুক্ত হবেন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকাগুলির সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি সেগুলির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, রোগ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অগ্রাধিকার। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পুরসভাগুলির হাতে যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী না-থাকায় এ কাজে ঘাটতি থাকছে। তাই এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুর এলাকাগুলিতে কয়েক হাজার কর্মীর একটি বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।