৪৮-৫০ বছর ধরে যে সকল উদ্বাস্তু শরণার্থীরা বাংলায় রয়েছেন, তাঁদের সকলের হাতেই তুলে দেওয়া জমির সত্ত্ব। উদ্বাস্তুদের জমির অধিকার সত্ত্ব দেওয়ার ব্যাপারে আজ এমনই এক বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে নবান্নে একটি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জমিতে যে উদ্বাস্তুরা রয়েছেন তাঁদের জমির অধিকার সত্ত্ব দেওয়া হবে।
মমতার অভিযোগ, ‘৪৮-৫০ বছর ধরে উদ্বাস্তু শরণার্থীরা এখানে আছেন। কিন্তু তাঁরা না ঘরকা না ঘাটকা হয়ে পড়ে রয়েছেন। আমরা আগেও কেন্দ্রকে বলেছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। উল্টে মাঝে মাঝেই উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদের নোটিস পাঠানো হয়।’ তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এরকম প্রায় ৯৭৩ একর জমি রয়েছে, যার খোঁজই কেউ রাখে না। সেখানে উদ্বাস্তুরা আছেন। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানে তাঁদের অধিকার সত্ত্ব দেবে।
শুধু তাই নয়। কেন্দ্রের অধীনে থাকা তিন একর পর্যন্ত জায়গায় উদ্বাস্তুরা থাকলে তাঁদের অধিকার সত্ত্ব দেবে রাজ্য সরকার। তিন একরের বেশি জায়গার ক্ষেত্রে সমীক্ষা করার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে রাজ্য সরকার রাজ্যের ৯৪টি উদ্বাস্তু কলোনিকে অধিকার সত্ত্ব দিয়েছিল। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে বসবাসকারী উদ্বাস্তুদের অধিকার সত্ত্ব দেবে সরকার।
যদিও এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, রাজ্য আদৌ এটা করতে পারে কিনা। তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বেসরকারি ১২০ একর জমি আছে। সেখানেও উদ্বাস্তুরা আছেন। সেই জমির অধিকার সত্ত্বও তাঁদের দেওয়া হবে। যার ফলে ১১ হাজার ৯৮৬টি পরিবার জমির অধিকার সত্ত্ব পাবে। তাঁর সাফ কথা, ‘১২ বছর এক জায়গায় থাকলেই একটা অধিকার জন্মায়। আর এই মানুষগুলি তো সেই ১৯৭১ সাল থেকে আছেন। ৪৮-৫০ বছর হয়ে গেল!’
নিজের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী এ কথাও বলেন যে, ‘এত বছর ধরে তাঁরা বাংলায় আছেন। কেউ ব্যবসা করেন, কেউ চাকরি করেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়াশোনা করে, ভোট দেন তাঁরা কিন্তু তাঁদের অধিকার দেওয়ার কথা কেউ ভাবেনি! এবার আমরা সেটা দিচ্ছি।’