রবিবাসরীয় সকালে মহারাষ্ট্র মামলায় সব পক্ষকে নোটিস দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। সরকার পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে দেবেন্দ্র ফডনবিশের তরফে রাজ্যপালকে দেওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতার চিঠি এবং রাজ্যপালের ফডনবিশকে সরকার গড়তে আমন্ত্রণ জানানোর চিঠি জমা দিতে হবে। মামলাটি পিছোনো নিয়ে বিজেপি এবং সরকারের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তাই আজ আদালতের শুনানির দিকে নজর রাজনৈতিক মহলের।
গতকাল সকাল সাড়ে এগারোটায় মহারাষ্ট্র মামলার শুনানি শুরু হয়। শুরু থেকেই উত্তপ্ত ছিল আদালত কক্ষ। এই শুনানিতে মহারাষ্ট্র সরকারের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি, শিবসেনার হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বাল এবং কংগ্রেস–এনসিপি’র পক্ষে ছিলেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, সরকার গঠনের জন্য বিজেপি রাজ্যপালকে যে চিঠি দেয় তা আদালতে জমা দিতে হবে। এনসিপি থেকে ভেঙে আসা বিধায়কদের সমর্থনের চিঠিও পেশ করতে হবে। এমনকী রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপি’র চিঠি চালাচালির সব নথি পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠকে শরদ শিবির দাবি করেছে, তাদের পক্ষে ৫০ জন এনসিপি বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। দলীয় বিধায়ক অনিল পাটিল-সহ আরও দু’জন আজ অজিত শিবির থেকে এসে যোগ দিয়েছেন শরদ শিবিরে। বিজেপির হাতে আটক রয়েছেন মাত্র চার জন। এনসিপি শিবির আরও দাবি করেছে, সমর্থন কিনতে বিপুল অঙ্কের অর্থ ছাড়াও প্রভাবশালী বিধায়কদের মন্ত্রীত্বের লোভ দেখিয়ে ফোন যাচ্ছে অজিত পওয়ারের পক্ষ থেকে। এনসিপি বিধায়কেরা যে হোটেলে রয়েছেন, সেখানে বিজেপি চর পাঠাচ্ছে অভিযোগ এনে রাতেই বিধায়কদের হোটেল বদল করা হয়েছে।
শরদ এবং অজিত— দুই পাওয়ারের দ্বন্দ্বে এনসিপি বিধায়কেরা কার দিকে থাকবেন, তার উপরেই অনেকটা নির্ভর করছে বর্তমান মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভবিষ্যত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এনসিপি-র ঘর মোটামুটি অটুট থাকলে চাপে পড়বে ফডনবিশের সরকার। আজ রাতেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন অজিত। পরে সিএমও জানায়, বৈঠকে কৃষক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির একাধিক প্রথম সারির নেতা এবং আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কেন্দ্র সেই নিয়ম এড়িয়ে গিয়েছে, ১৯৬১ সালের একটি আইনকে হাতিয়ার করে। সেই আইন অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে কপিল সিব্বাল বলেন, মহারাষ্ট্রের মানুষ একটি সরকার চায়। শিবসেনার হাতে সরকার গঠনের মতো প্রয়োজনীয় বিধায়ক রয়েছে। আজই তা বিধানসভায় প্রমাণ করতে পারে শিবসেনা।