বাংলার ক্ষমতায় এসেই বাণিজ্যিক উন্নতিতে নজর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই অনেক এগিয়েছে বাংলা। বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন বাংলার প্রতি। ১১-১২ ডিসেম্বর দীঘায় যে ‘বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভ’ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, সেখানে হাজির থাকার জন্য নিজে থেকেই আবেদন করেছেন বিদেশি প্রতিনিধিরা। রাজ্যের সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থান তো বটেই, সেই সঙ্গে রয়েছে সরকারের আন্তরিক উদ্যোগ। এর সঙ্গে জুড়েছে পরিকাঠামো থেকে ১২.৫৮ শতাংশ অভ্যন্তরীণ আর্থিক বৃদ্ধির খতিয়ান। তাই বিনিয়োগের জন্য বাংলাই উপযুক্ত জায়গা। পশ্চিমবঙ্গের অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিশেষ বৈঠকে আজ অকপটে এমনই ইতিবাচক মনোভাব জানিয়ে দিলেন ৩৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত তথা প্রতিনিধি।
পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে কলকাতায় বিজনেস কাউন্সিল খুলতে চায় বলেও বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। দেউচা পাচামির মতো রাজ্যের কয়লা ব্লক প্রকল্পের কাজে যুক্ত হতে আগ্রহ দেখিয়েছে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক। পশ্চিমবঙ্গের হস্তশিল্প বিক্রি তথা বিপণনের ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স। বাংলায় বিনিয়োগের জন্য বণিকসভা ফিকির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওয়াই কে মোদি ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের।
মূলত বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভের প্রাক্কালে প্রস্তুতি বৈঠকেরই আয়োজন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম এবং ফিকি। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে আলোচনা। বেঙ্গল মানে বিজনেস, এই স্লোগানে জোর দেন অমিত মিত্র। অল্প হলেও বিনিয়োগ টানার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দেশে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে আয়োজন করেছেন বিজিবিএস অর্থাৎ বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট। এরই পাশাপাশি অল্প আয়োজনে শুরু করেছেন বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভও। তারই প্রস্ততি বৈঠক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মতো এদিন বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অমিত মিত্র। ওই বৈঠকেই বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ বাড়াতে ওয়াই কে মোদি বলেন, ‘ই-সার্ভিস থেকে লগ্নির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে যে সিঙ্গল উইন্ডো ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তা অত্যন্ত ফলপ্রসূ। ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যদি কোথাও সমস্যা হয়, তাহলে দ্রুত সমাধান করছে বাংলা।’ বৈঠকের পর বাংলায় বিনিয়োগের প্রশ্নে তাঁদের মতামত জানতে চাইলে বিদেশি প্রতিনিধিদের বেশিরভাগই ‘গ্রেট ইনিশিয়েটিভ’ বলে মন্তব্য করেন।
বিদেশি প্রতিনিধিদের এই মন্তব্য এবং বিনিয়োগের আগ্রহ দেখে রাজ্য সরকার অত্যন্ত খুশি। কারণ, দিল্লির তারকাখচিত হোটেলে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কোনও দেশের প্রতিনিধিই রাজ্যে বিনিয়োগ বা লগ্নি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন না। ফলে সিঙ্গুর পর্বের জেরে লগ্নি প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে দেশ-বিদেশে যে নেতিবাচক ধারণা ছড়িয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ, তা ভিত্তিহীন বলেই প্রমাণ হচ্ছে দাবি করছে রাজ্য।