মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে জলঘোলা এখনও অব্যাহত। তাই ২৪ নভেম্বর অযোধ্যা সফর স্থগিত করেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। এর মধ্যেই গতকাল থেকে শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিরোধীদের মধ্যে উল্লেখ্য ভূমিকা নিল শিবসেনা। বলা চলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির অশান্তি দেখা গেল সংসদেও।
গতকাল বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হল এনডিএ শরিক শিবসেনা। অধিবেশনের শুরুতেই লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিরোধী শিবিরে যোগ দিয়ে শিবসেনা কেন্দ্রীয় সরকারকে কোণঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে। রাজনৈতিক নেতাদের অনুমান, চলতি অধিবেশনে এনডিএ সরকারকে বেগ দিতে সচেষ্ট হবে শিবসেনা।
গতকাল মহারাষ্ট্রের অকাল বর্ষণকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণার দাবি তোলেন শিবসেনা সাংসদরা। প্রায় আধ ঘণ্টা হইচই করার পর ওয়াকআউট করেন তাঁরা। অধিবেশনের প্রথম দিনেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পার্লামেন্ট।
অন্যদিকে রাজ্যসভায় ‘দেশে অর্থনৈতিক দুরবস্থা’ বিষয়ে আলোচনা চেয়ে একটি নোটিস জমা দিয়েছে তৃণমূল। একই দাবিতে পৃথক নোটিশ এনেছে কংগ্রেসও। উল্লেখযোগ্য ভাবে অন্যান্য বিরোধী দলের পাশাপাশি তৃণমূলের এই নোটিসে সই করেছে শিবসেনা। মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং এনসিপি–শিবসেনা–কংগ্রেস জোট বেঁধে সরকার গড়ার চেষ্টার মধ্যে সংসদে শিবসেনার এই ভূমিকা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের নোটিসে সই করেছে সপা, বসপা, আরজেডি, ডিএমকে, সিপিএম, সিপিআই, আপ এবং কয়েকজন নির্দল সাংসদ।
লোকসভায় এদিন শুরু থেকেই ‘কিসানোঁ কো রাহত দো’ স্লোগান তুললেন বিরোধী দলের সাংসদরা। কংগ্রেস, এনসিপি, সপা, বসপা সাংসদরা বিরোধীদের ওপর মিথ্যা মামলা, গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা–সহ কয়েকটি ইস্যুতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
মহারাষ্ট্রে শস্যহানির জন্য রাজ্যপাল ঘোষণা করেছেন, এক থেকে দুই হেক্টর পর্যন্ত জমিতে খারিফ শস্যের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৮,০০০ টাকা এবং সমপরিমাণ জমিতে ফুলচাষের জন্য ১৮,০০০ টাকা দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণের নামে চাষিদের সামান্য টাকা দিয়ে দায় সারায় সংসদের বাইরেও বিজেপিকে তুলোধোনা করেছে শিবসেনা। দলীয় পত্রিকা ‘সামনা’য় শিবসেনা লিখেছে, ‘মহারাষ্ট্রের কৃষকরা ভেবেছিলেন বড় ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করবেন রাজ্যপাল। সে জায়গায় খরিফ শস্যের জন্য হেক্টর প্রতি ৮,০০০ টাকা আর ফুলচাষের জন্য হেক্টর প্রতি ১২,০০০ টাকা খুবই কম। চাষিরা হতাশ। রাজ্যের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিলও স্বীকার করেছেন ক্ষতিপূরণ বাবদ সামান্য টাকা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে এর নিন্দা করার সাহস আছে কি? বিজেপি নেতাদের কথায় আর কাজে বিস্তর ফারাক।’