গান্ধী পরিবারের ওপর থেকে এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে আগেই ভয়ানক ও উন্মাদের মতো সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। এবার এ নিয়ে উত্তাল হল লোকসভাও। তিন দশকের বেশি সময় ধরে থাকা গান্ধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আজ শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর জবাব চান বিরোধীরা। গতকালের মতো আজও গরহাজির ছিলেন মোদী। আর প্রবল হইচই স্লোগানের মধ্যে কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান অমিত শাহও। এরপরই ওয়াকআউট করে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, এবার থেকে এসপিজি-র বদলে জেড প্লাস নিরাপত্তা পাবেন গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। বিরোধীরা তখনই প্রশ্ন তোলে, যে পরিবারের দু’জন সদস্য সন্ত্রাসবাদীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন, কীভাবে সেই পরিবারের নিরাপত্তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার? এদিন অধিবেশন চলাকালে এই বিষয়টি নিয়েই সরব হয় কংগ্রেস। লোকসভায় ওয়েলে নেমে স্পিকারের আসনের দিকে এগিয়ে গিয়ে ‘নিরাপত্তার নামে রাজনীতি বন্ধ করো’, ‘একনায়কতন্ত্রের অবসান হোক’, ‘প্রধানমন্ত্রী জবাব দিন’, ‘আমরা ন্যয় বিচার চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন কংগ্রেস সাংসদরা। ডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স-সহ অন্য বিরোধী দলগুলিও সরব হয়। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তাঁদের বারবার জায়গায় ফিরে যেতে অনুরোধ করলেও তাতে কাজ হয়নি। শেষমেশ কংগ্রেস নেতারা ওয়াকআউট করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পরের বছরই প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ক্যাবিনেট সচিবের নির্দেশে বিশেষ বাহিনী ‘স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি) তৈরি হয়। পরে ১৯৮৮ সালের ২ জুন সংসদে ‘এসপিজি বিল’ পেশ করে পাশ করানো হয়। বর্তমানে ওই বাহিনীতে রয়েছেন তিন হাজারের বেশি সদস্য। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ বিশ্বের প্রথম সারির বলে ধরা হয়। আজ এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েই মোদী সরকারকে নিশানা করে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীরা সাধারণ মাপের কেউ নন। খোদ প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী গান্ধী পরিবারের সদস্যদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য এসপিজি সুরক্ষা অনুমোদন করেছিলেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দুবার এনডিএ কেন্দ্রে সরকার গড়েছে, কিন্তু তাঁদের এসপিজি নিরাপত্তা বলয় কখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। মোদী জমানায় এসে এবার যা হল।