ফের মহারাষ্ট্রে শিব সেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের সরকার গঠন নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকার গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা জটের মধ্যেই এই দাবি করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। তাঁর দাবি, তাঁদের তৈরি করা সরকার পূর্ণমেয়াদ স্থায়ী হবে। মাঝপথে কোনও নির্বাচন করার প্রয়োজন পড়বে না।
যে জোট তৈরি হতেই এত সময় লাগছে, তার স্থায়ীত্ব কতদিন হবে এই নিয়ে যাতে প্রশ্ন না-ওঠে, তাই আগেভাগেই সতর্ক শরদ পাওয়ার। শুক্রবার তিনি জানালেন, শিব সেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস দৃঢ় একটি সরকার গঠন করতে চায়, যা উন্নয়ন-কেন্দ্রিক। পাওয়ার জানান, আগামী ২০ দিনের মধ্যেই মহারাষ্ট্রে সরকার তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রী হবেন শিব সেনার প্রতিনিধি।
এদিন এনসিপি প্রধান আরও বলেন, ‘মিড-টার্ম নির্বাচনের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এই সরকার গঠিত হবে এবং পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে। পাঁচ বছর যাতে সরকার চলে তার সব প্রচেষ্টা আমরা করব।’
সরকার গঠনের জন্য বিজেপিও এনসিপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে পাওয়ার বলেন, তাঁর দল শুধুমাত্র শিবসেনা ও কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। অন্য কোনও দলের সঙ্গে কথা হয়নি। তিন দল আপাতত অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরিতে ব্যস্ত বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবারই তার একটি খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, সঠিক দিশাতেই আলোচনা হচ্ছে৷ এই আলোচনা আরেকটু নির্ণায়ক জায়গায় পৌঁছলে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে দিল্লী এসে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করবেন৷ তিনি তখন আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসকে মন্ত্রিসভায় থাকার অনুরোধ করবেন৷ সেটা হলে এনডিএ থেকে আরও একজন শরিক কমবে এবং ইউপিএ-তে নতুন শরিক যুক্ত হবে৷
তার আগে আগামী রবিবার শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সনিয়া গান্ধীর আরেকটা বৈঠক হতে পারে৷ সোমবার থেকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু৷ তার আগের দিন শরদ পাওয়ার ১০, জনপথ গিয়ে মহারাষ্ট্র নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে৷ সেখানেই শেষতম পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত কথাবার্তা হবে৷ রবিবার বালাসাহেব ঠাকরের মৃত্যুদিবস বলে উদ্ধব সে দিন আসতে পারবেন না৷ তিনি অন্য দিন দিল্লীতে আসবেন৷
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, জোট নিয়ে আলোচনা শেষ হতে সম্ভবত আর এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে৷ তার মধ্যে অভিন্ন কর্মসূচি থেকে মন্ত্রক বণ্টন পর্যন্ত সবকিছুরই ফয়সালা হয়ে যাবে৷ আসলে এনসিপি ও কংগ্রেস এখন প্রতিটি বিষয় নিয়ে শিবসেনার সঙ্গে প্রবল দরাদরি করছে৷ সে জন্য একটু সময় লাগবে৷ না হলে আরও আগে হয়ে যেত৷ আসলে শিবসেনার সঙ্গে এই প্রথম কংগ্রেস ও এনসিপির জোট হবে৷ ফলে তারা সবকিছু আগে থেকে ঠিক করে নিয়ে মাঠে নামতে চাইছে৷ যাতে আগামী ৫ বছর কোনো ঝামেলার মধ্যে পড়তে না হয় সরকারকে।