দলের তহবিলের জন্য বিধায়ক-সাংসদদের মাসিক ভাতা থেকে চাঁদা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে তৃণমূলে। প্রতি মাসেই দলীয় তহবিলে জমা পড়ছে সেই অর্থ। সেই ‘চাঁদাপ্রাপ্তি’তেও এবার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চাইছে তৃণমূল। ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে চাওয়া হচ্ছে বিধায়ক-সাংসদদের প্যান কার্ডের নথি। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় বিধায়ক এবং সাংসদদের প্রত্যেককে তাদের প্যান কার্ডের ফটোকপি স্বাক্ষরসহ দলের কাছে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের পরিষদীয় দল এবং সংসদীয় দল দুই দলেরই পৃথক পৃথক তহবিল রয়েছে। প্রতি মাসে বিধায়কদের ভাতা থেকে হাজার টাকা এবং সাংসদদের ভাতা থেকে ১০ হাজার টাকা করে কেটে সেই তহবিলে জমা হয়। বিধায়কের তহবিল দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কলকাতায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সদর কার্যালয়ে পরিষদীয় দলের তহবিলের অ্যাকাউন্টটি রয়েছে-বলে সূত্রের খবর। প্রতি মাসে ভাতা থেকে দলকে দেওয়া বিধায়কদের সেই চাঁদার প্রমাণ হিসেবে প্যান কার্ডের নথি জমা করতে বলা হয়েছে দলের তরফে। অন্যদিকে, সাংসদদের কাছেও একই নথি চেয়েছে দল।
প্রসঙ্গত, প্রতি মাসেই সাংসদ বিধায়করা দলীয় তহবিলে টাকা দিয়ে থাকেন। নির্বাচন থাকলে ভোটের মাসের আগে এক মাসের পুরো ভাতাই বিধায়ক এবং সাংসদদের দলীয় তহবিলে জমা করার নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। যা নিয়ম করে পালন করা হয়। এবার সেই দলীয় তহবিলের জমা টাকার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখতেই এই নয়া পদক্ষেপ করেছে দল। দলের এক বর্ষীয়ান নেতার বক্তব্য, ‘এর আগে অকারণে বহু হেনস্থা করা হয়েছে তৃণমূলকে। আমার ধারণা থেকে বলতে পারি দলীয় তহবিলে স্বচ্ছতার প্রশ্নে দলের নেতৃত্ব নিশ্চয়ই এমন পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে রাখতে চান। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আঙুল তোলার সুযোগই না পায়।’
একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, বিধায়ক-সাংসদদের ভাতা সকলেরই জানা। এমপি-এমএলএ-রা সেই ভাতা থেকে দলকে চাঁদা দিলে সব নথিও ব্যাঙ্কের কাছে থাকে। দলের কাছে প্যানকার্ডের ফটোকপি থাকলে দলও তার দিক থেকে পরিষ্কার থাকতে পারবে। কোনও জনপ্রতিনিধির অ্যাকাউন্টজনিত কোনও অস্বচ্ছতা দেখা দিলে তার দায় তো গোটা দলের হতে পারে না। তাই দলও সাবধান থাকতে চায়, কোনও লেনদেনে যেন প্রশ্ন না-ওঠে।’