বিশ্বের সব গুরুত্বপূর্ণ দিনকে নতুনভাবে মানুষের স্মরণে গেঁথে দিতে অভিনবভাবে সেজে ওঠে গুগল। অভাবনীয় শিল্পের মাধ্যমে সাজিয়ে দিনটির গুরুত্ব মানুষের কাছে তুলে ধরে। আজও তেমনই এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ ১৪ই নভেম্বর, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে যে দিনটিকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করে সমগ্র ভারতবাসী। এই বিশেষ দিনেই এক অভিনব ডুডল-চমক নিয়ে হাজির গুগল।
নগরায়নের নামে গাছ কেটে বনভূমি ফাঁকা করে গড়ে উঠছে একের পর এক শহর। মানুষ উন্নতির পথে যত অগ্রসর হচ্ছে ততই ধাপে ধাপে ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে আমাদের সবুজ গ্রহ। আর এই পরিস্থিতিতে শিশু দিবসের দিন গুগল তার হোমপেজ সাজাল এমনই এক অসাধারণ ডুডল দিয়ে, যেখানে দেখা যাচ্ছে গাছ হাঁটছে, নিজেকে বাঁচানোর স্বার্থে, মানুষের ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে। হেঁটে চলেছে গাছ।
উড়ালপুল বানাতে হবে, কিন্তু সেখানে অনেক গাছ। মানুষ গাছকে তার সমস্যার কথা জানাল। পরের দিন সকালে ইঞ্জিনিয়র নিয়ে গিয়ে মাপজোখের কাজ শুরুর আগেই দেখা গেল গোটা এলাকায় একটাও গাছ নেই। তারা নিজেদের সুবিধার্থে অন্যত্র সরে গিয়েছে। কল্পনার জগতের এহেন হেঁটে চলা গাছ বাস্তবে থাকলে মানুষকে আর ভাবতে হত না। কোনওরকম পরিবেশ দূষণ, বন ধ্বংস ছাড়াই নগরায়ন ঘটত। গাছেরও মৃত্যু হত না। সেই হেঁটে চলা গাছই আজকের ডুডল।
গুগলের এই নজর কাড়া ডুডল দেখে চমৎকৃত সারা দেশ। গুগলের তরফে জানানো হয়েছে, শিশু দিবস উপলক্ষ্যে ডুডলের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল এই ওয়েব সার্জ ইঞ্জিন। ভারতের ১.১ লক্ষ খুদে সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাঁরা সকলেই প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়া। শিশু দিবসের ডুডলে দিতে হবে আনকোরা ভাবনার ছবি, এই ছিল প্রতিযোগিতার বিষয়। তাতে তাক লাগিয়ে দিয়েছে খুদের দল।
হ্যাঁ, কেউ বা টেকনোলজির সাহায্যে বাধাহীন উড়তে চেয়েছে। কেউ বা সমুদ্রকে দূষণ মুক্ত করতে চেয়েছে। প্রত্যেকটি ভাবনাই নজর কেড়ে নেবে। তবে শেষপর্যন্ত সেরার শিরোপা জিতে নিল হেঁটে চলা গাছ। গুরুগ্রামের দিব্যাংশি সিঙ্ঘলের আঁকা এই ছবিটিই বেঝে নিল গুগল। নিজের ছবিতে গাছ বাঁচিয়ে সভ্যতার এগিয়ে চলার সুযোগ করে দিয়েছে দিল্লী পাবলিক স্কুলের এই ছাত্রী। আর সেরা ডুডল নির্বাচনে বিচারকরা তাকেই বেছে নিয়েছেন।
মাস তিনেক আগে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে গুগল। প্রতিযোগিতার থিম ছিল, যখন আমি বড় হব, সেই থিমে বাজিমাত করতে দেশের ৫০টি শহরের খুদেরা অংশ নেয়। আর তাদের সৃজনীর বিচার করতে গুগল ডাকে ছোটা ভীমে’র জনক রাজীব চিলাকা’কে, ছিলেন ভারতের অন্যতম মহিলা ইউটিউবার প্রযাক্তা কোহলি, নেহা ডুডলসের প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রখ্যাত শিল্পী নেহা শর্মা। সঙ্গে গুগুল ডুডলের গোটা টিম।
অভিনব ভাবনা, শৈল্পিক মেধা ও থিম শিরোনামের সঙ্গে সাদৃশ্য আছে এমন ছবিকেই বাছার তালিকায় রাখার কথা ছিল। তার মধ্যে ২০জনকে নির্বাচন করেন বিচারক মণ্ডলী। তাঁদের সৃজনী গণ ভোটের জন্য শোকেস করা হলে দেখা যায় ৬ লক্ষ জনতা ভোট দিয়ে পাঁচজনকে দলগতভাবে সেরার তকমা দিতে চায়। দিব্যাংশি জিতে নেয় সেরার শিরোপা। তার আঁকা ছবিটিই আজকের শিশু দিবসের ডুডল। যার মাধ্যমে এই বিশেষ দিনটির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে এক সামাজিক বার্তা পৌঁছে দিল গুগল।
