সুপ্রিম কোর্ট গত বছর বলেছিল, শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের ঢুকতে না দেওয়া সংবিধানবিরোধী। সেই রায় খতিয়ে দেখার জন্য আবেদন জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তার ওপরে শীর্ষ আদালত রায় দেবে বৃহস্পতিবার। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিল, রাফায়েল ডিল নিয়ে সিবিআই তদন্তের দরকার নেই। সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। তার ওপরেও বৃহস্পতিবার রায় দেওয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরে গত কয়েক মাসে মাত্র দু’জন মহিলা ওই মন্দিরে ঢুকতে পেরেছেন। অপর যে মহিলারা ঢুকতে চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের ভক্তদের বাধায় পিছিয়ে আসতে হয়েছে। কেরালা সরকার আদালতে জানায়, সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন নেই। শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলে, যে কোনও প্রথাকে সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার মেনে চলতে হবে। কোনও প্রথা যদি মৌলিক অধিকারের বিরোধী হয়, তা চালু রাখা যাবে না।
একসময় শবরীমালা মন্দিরের বোর্ড বলেছিল, মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ করতে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ সেজন্য যে পরিকাঠামো ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা লাগবে তা মন্দিরে নেই। এদিন সবাইকে চমকে দিয়ে ত্রিবাঙ্কুর দেবস্থানম বোর্ড বলে, মন্দিরে প্রত্যেকের প্রবেশের অধিকার আছে। বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র প্রশ্ন করেন, বোর্ডের আগের অবস্থান পালটে গেল কেন? বোর্ডের কৌঁসুলি জবাব দেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আদালতের রায়কে সম্মান করে চলব। এর আগে সেপ্টেম্বরে বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র বলেছিলেন, সতীদাহের মতো কুপ্রথা বাদে অন্যান্য ঐতিহ্য নিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করা সম্ভব নয়।
রাফাল নিয়ে আগেই সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, সরকারি অফিসাররা রাফাল চুক্তি নিয়ে অনেক কথা কোর্টের কাছে গোপন করেছেন। রায় পুনর্বিবেচনার জন্য তারা আবেদন করেছে। এই নিয়ে দ্রুত শুনানির জন্যও আবেদন করা হয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছিলেন, এই সংক্রান্ত পিটিশনগুলি শোনার জন্য পৃথক বেঞ্চ গঠন করতে হবে। ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা দরকার। দেখি কী করা যায়।
ওই রায় নিয়ে মোট চারটি পিটিশন জমা পড়েছে। সরকারপক্ষ থেকেও একটি পিটিশন করে বলা হয়েছে, ওই রায়ে একটি ভুল আছে। তা সংশোধন করা হোক। আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের পিটিশনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট অফিসাররা কোর্টে বলেছিলেন, সিএজি সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছে। বাস্তবে তখনও পেশ করেনি। অফিসাররা আদালতকে ভুল বুঝিয়েছেন। প্রশান্ত ভূষণ আর একটি পিটিশন করে বলেছেন, বিচারপতিরা রায় দিয়েছিলেন, সরকার সব নিয়ম মেনে ফ্রান্সের সঙ্গে ৩৬ টি রাফাল কেনার চুক্তি করেছে। এই রায় ফের বিবেচনা করা হোক।আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং-ও রায় খতিয়ে দেখার আবেদন করেছেন।