এর আগে বহু বিতর্কিত মন্তব্য করে বারবারই খবরের শিরোনামে এসেছেন। এবার ফের এক বিতর্ক উস্কে দিলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। এবার মেঘালয়ের রাজ্যপালের টুইট আক্রমণের মুখে প্রয়াত সিপিএম নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। রাম মন্দির ইস্যুতে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে বেনজির কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির।
অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বাবরি মসজিদের জায়গায় তৈরি হবে রাম মন্দির। বিকল্প হিসেবে ৫ একর জমি দেওয়া হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য। মন্দির তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে ৩ মাসের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এই অবস্থায় রবিবার রাতে একটি টুইট করেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। সেখানে জ্যোতি বসুর নাম ব্যবহার করার পাশাপাশি বাম মতাদর্শের দিকেও তীব্র ব্যঙ্গ ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে যখন অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির জন্য দেশজুড়ে শিলা সংগ্রহের কর্মসূচী নিয়েছিল বিজেপি, সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে জ্যোতি বসু। স্বভাবতই বিজেপির এই রাম শিলা সংগ্রহের কর্মসূচীতে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন আজীবন বামপন্থী জ্যোতিবাবু। কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ইট পুজো। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে তথাগত রায় ওই কটাক্ষই ফিরিয়ে দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
রবিবার রাত ৯ টায় করা টুইটে তথাগত লিখেছেন, ১৯৮৯ সালে রাম শিলা সংগ্রহের কর্মসূচির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে জ্যোতি বসু এর নাম দিয়েছিলেন ইট পুজো। তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে দেখতেন রাম মন্দির নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরুর পথে এবং তাঁর মার্কস ও লেনিনের ঠাঁই হয়েছে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। এই মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে।
উল্লেখ্য, রাজ্যপালের আসনে বসার পরেও বারবারই বিজেপি নেতাদের মতোই আচরণ করেছেন তথাগত। এর আগেও বহুবার তাঁর টুইট বা মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক বিতর্ক। মাসখানেক আগে পাঠ্যক্রমে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার স্বপক্ষে বলতে গিয়ে তথাগত এই মন্তব্য করে বসেন যে, ‘বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করতে পারলে হিন্দি শিখতে আপত্তি কীসের?’ যা নিয়ে দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।
এছাড়াও কখনও জয় শ্রীরাম স্লোগানের পক্ষ নিয়ে জয় বাংলা স্লোগানের বিরোধীতা করে, কখনও আবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব নিয়ে বিভেদের রাজনীতি- একটি রাজ্যের সাংবিধানিক অভিভাবকের পদে থেকেও বারবারই শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। সেই ধারা বজায় রেখেই এবার প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে ব্যঙ্গ করার পাশাপাশি যেভাবে মার্কস-লেনিনকেও আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলার কথা বললেন তিনি।