ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বাংলাদেশে। নিহত হলেন কমপক্ষে ১৫ জন যাত্রী। জখম বহু। সোমবার রাত ৩টে নাগাদ পূর্ব-মধ্য বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বলে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১২জন যাত্রী। অন্য ৩ যাত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ লুপ লাইন দিয়ে মন্দবাগ স্টেশনে প্রবেশ করছিল। একই সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ‘তুর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস’ মন্দবাগ স্টেশনের মূল লাইনে দাঁড়ানোর কথা ছিল। তবে তুর্ণা এক্সপ্রেস স্টেশনে না দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক গতিতে চলতে থাকে। এরপরেই ঘটে যায় মর্মান্তিক বিপত্তি। দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে ঘটনাস্থলেই ১৫ জন মারা গিয়েছে বলে খবর। আহত হয়েছেন শতাধিক। এদিকে দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম-সিলেটের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। খুব দ্রুতই রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আহতদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। একইসঙ্গে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।
গিগুলির ভিতরে আরও বেশ কয়েকজন যাত্রীর মৃতদেহ থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকর্মীরা। এখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। দেহগুলিতে দুর্ঘটনাস্থল সংলগ্ন এক স্কুলের মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে জখমদের কসবা, কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া রেল দপ্তরের পক্ষ থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে অকুস্থলে রয়েছেন, রেল আধিকারিক মহম্মদ মোফাজ্জল হোসেন, জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌল্লা খান, পুলিস সুপার আনিসুর রহমান এবং বিজিবির লেফট্যানেন্ট কর্নেল মহম্মদ ইকবাল হোসেন। ইতিমধ্যেই লাকসাম এবং আখাউড়া থেকে দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে দুটি রিলিফ ট্রেন। এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌল্লা খান জানিয়েছেন, সম্ভবত লোকো মাস্টাররা সিগনাল না মানার ফলেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সে দেশের রেল দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পর থেকেই চট্টগ্রামের সঙ্গে সিলেট এবং ঢাকার রেল যোগাযোগ আপাতত বন্ধ রয়েছে।