শতাব্দী প্রাচীন বিবাদে ইতি টেনে, অযোধ্যা মামলায় রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বসম্মতিতে শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়, শর্তসাপেক্ষে বিতর্কিত জমি দেওয়া হল রাম জন্মভূমি ন্যাসকে। অযোধ্যাতেই পাঁচ একর বিকল্প জমি দেওয়া হবে মুসলিম পক্ষ বা সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে। ১৯৯ সালের অযোধ্যা আইনের আওতায় তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্রকে ট্রাস্ট গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় বিতর্কিত জমির দখল নিয়ে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষে রায় দিয়ে শিয়া বোর্ডের দাবি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি নির্মোহী আখড়ার ‘সেবায়েত’ হওয়ার দাবি খারিজ করল শীর্ষ আদালত। এএসআই-এর রিপোর্টে শীলমোহর দিয়ে রায়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সাফ বলেন, ‘ফাঁকা জমিতে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়নি। এর আগে সেখানে অমুসলিম সৌধের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে সেই কাঠামো ভাঙা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত নয়।’ বেশ খানিকক্ষণ ধরে চলা রায় দানে শীর্ষ আদালত সাফ জানায়, ১৯৪৯ সালে মূল গম্বুজের নিচে রামের মূর্তি স্থাপন করা মসজিদের অবমাননার শামিল। ফলে ১২ বছর পর দায়ের করা হলেও সুন্নি পক্ষের মামলা বিচার্য। রায়দান করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আবদুল নাজির।
এদিকে, শুক্রবার থেকেই অযোধ্যা-ফৈজাবাদ থেকে শুরু করে গোটা দেশে ব্যাপক সতর্কতামূ্লক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে রাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক খুলে ফেলেছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। আজ উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্য স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। বাংলাতেও রাতে নবান্ন থেকে জেলাশাসকদের সতর্কতা রক্ষার বার্তা পাঠানো হয়েছে। অযোধ্যার আশপাশে রাত থেকেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বিশেষ ড্রোন ওড়ানো শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট নিয়েও সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। দেশের ৭৮টি বড় স্টেশনে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রেল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সেনা ও বায়ুসেনার সঙ্গে সমন্বয় রাখছে। দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানগুলিতেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অযোধ্যায় ৬০ কোম্পানি পুলিশ ও আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে। নয়ডা-সহ উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকায় চলছে ফ্ল্যাগমার্চ। জম্মু-কাশ্মীরের সর্বত্র ১৪৪ ধারা লাগু করা হয়েছে।
