দেশ থেকে বহুদূরে সেই হাভার্ডে তখন ক্লাস নিচ্ছিলেন তিনি৷ সেসময়ই সুদূর কলকাতা থেকে খারাপ খবর বয়ে নিয়ে এল একটি ফোন৷ প্রাক্তন স্ত্রী তথা প্রখ্যাত সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন আর নেই। ভারতীয় সময় সন্ধে ৭.৩৫-এ সকলকে ছেড়ে পরলোক পাড়ি দিয়েছেন তিনি৷ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভারাক্রান্ত গলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ তথা প্রফেসর অমর্ত্য সেন ঘনিষ্ঠমহলে বললেন, ‘কি হবে আর কলকাতায় ফিরে! যার সঙ্গে দেখা করতে যেতাম সেই তো আর নেই৷ চলে গিয়েছেন আমাদের ছেড়ে।’
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্বাবিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সূত্রেই দু’জনের আলাপ। সেখানেই গড়ে উঠেছিল সম্পর্ক অমর্ত্য-নবনীতার। তারপর বিয়ে গড়িয়ে বিচ্ছেদ। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা হিন্দুস্তান পার্কের বাড়িতে ৮১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নবনীতা। একসময়ের জীবনসঙ্গীর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে নানান কথা বললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। জানালেন দুই কন্যা অন্তরা দেব সেন ও নন্দনা দেব সেনের জন্যই নিয়মিত যোগাযোগ ছিল নবনীতাদেবীর সঙ্গে।
যেহেতু তিনি কলকাতায় নেই। তাই ফোনেই সংবাদমাধ্যমকে নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অমর্ত্য। তিনি জানান, ‘প্রায় রোজই কথা হত নবনীতার সঙ্গে। আমাদের দুই মেয়ের সৌজন্যেই শেষপর্যন্ত যোগাযোগ ছিল ওঁর সঙ্গে।’ নবনীতার লেখা, চিন্তা করার ক্ষমতা, যুক্তিবাদী বোধের কথাও উঠে আসে তাঁর গলায়। সঙ্গে আফসোস, ‘শেষ দেখা দেখতে পারলে ভাল লাগত।’
উল্লেখ্য, এদিন প্রয়াত লেখিকাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হিন্দুস্তান পার্কে উপচে পড়ে মানুষের ভিড়। যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, কবি শঙ্খ ঘোষ, লেখিকা বাণী বসু-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। হিন্দুস্থান পার্ক থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে নন্দন চত্বর। তারপর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে লেখিকার।